গোপনে গাছ বিক্রি করে নিজেই থানায় কর্মকর্তা!
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মানিকগঞ্জে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বিভিন্ন জাতের ১৫ টি কাটা গাছের গুড়ি গোপনে বিক্রি করে নিজের দোষ এড়াতে থানায় নাটকীয় অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইসরাত জাহান।
গত দুই দিন অনুসন্ধান করে জানা যায়, ডা: ইসরাত জাহান তার অতি বিশ্বাসী আউট সোর্সিংএ নিয়োগ করা মোসাঃ শরিফা আক্তারের মাধ্যমে ঝিটকা বাজারের কাঠের ব্যবসায়ী জাহিদের কাছে গাছ গুলো বিক্রি করে দেয়। সেই গাছ দিন-দুপুরে ৮ জন শ্রমিক দিয়ে নছিমন গাড়ি বোঝাই করে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ও ষ্টাফদের চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে যায় গাছের গুড়িগুলো।
অফিস সহকারী রজ্জব আলী বলেন, হাসপাতালের মালী আলমগীর আমাকে এসে বলে, কে বা কারা যেনো হাসপাতালের গাছ নিয়ে যাচ্ছে আমি আলমগীর ও চাঁনমিয়াকে ডেকে নিয়ে গাছ নিতে বাধা দেই এবং চাঁনমিয়াকে বলি মেইন গেট বন্ধ করে দিতে তখন শরীফা এসে বলে মেডামের আদেশেই এই গাছ নিয়ে যাচ্ছে। তার কথার উপর ভিক্তি করে আমরা সবাই অফিসে চলে আসি'।
নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালক চাঁনমিয়া বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,'আমরা গাছ নিতে বাধা দিয়েছিলাম পরে শরীফা এসে বলেন, মেডামের কথায় গাছ নিয়ে যাচ্ছে তখন আমরা সেখানে থেকে চলে আসি।
ঝিটকা বাজারের কয়েক জন কাঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহিদ হাসপাতালের গাছ কিনে ঝামেলায় পড়েছে বৃহস্পতিবার তাকে পুলিশে নিয়ে গিয়েছিল তখন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাসার সবুজ তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছেন।
কাঠ ব্যবসায়ী জাহিদ বিষয়টি শিকার করে বলেন, 'শরীফা আমার খালা হয় সে এসে আমাকে হাসপাতালের গাছ কিনতে বলেন আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি কোন ঝামেলা হবে না তো তখন তিনি আমাকে বলে মেডামের কথায় গাছ বিক্রি করলে কি হবে? পরে আমি আমার কয়েকজন লোক দিয়ে গাছ গুলো নিয়ে আসি গাছ এখনো আমার কাছেই আছে। আমি যদি জানতাম এতো ঝামেলা হবে আমি কি তাহলে এই গাছ কিনতাম। গাছ আনার পর পুলিশ আমার দোকানে এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায় পরে সবুজ ভাই আমাকে থানা থেকে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে শরীফার কর্মস্থলে ও মুঠোফোনে একাধিকরার ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগের তদন্তকারী হরিরামপুর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ মোস্তাফিজ জনবাণীকে বলেন, “আমি ঝিটকা কাঠপট্ট্রি এলাকায় রাস্তার উপর পড়ে থাকা কিছু কাঠের গুড়ি দেখতে পেয়ে অভিযোগকারীকে জানাই। তারা কাঠগুলি চিহ্নিত করে আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইসরাত জাহানের সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর মোবাইল ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী জনবাণীকে বলেন, “যেহেতু হাসপাতালের সম্পাত্তি খোয়া গেছে এবং এর সাথে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
এসএ/