ভালুকায় বিদ্যুৎ গ্যাস সঙ্কটে মিল ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ভালুকায় বিদ্যুৎ গ্যাস সঙ্কটে মিল ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিদ্যুৎ লোডশেডিং, গ্যাসের সরবরাহ অপ্রতুল ও প্রেসার কম থাকায় শিল্প এলাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।এভাবে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সঙ্কট থাকলে অনেক মিল মালিকরা তাদের মিল বন্ধে করে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন।এতে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন।

সরেজমিনে বিভিন্ন মিল পরিদর্শন দেখা যায় উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক শিল্প কারখানা রয়েছে। যার মাঝে প্রায় ৩০টি ড্রাইং ফ্যাক্টরি রয়েছে। বিদ্যুৎ লোডশেডিং,গ্যাসের সরবরাহ অপ্রতুল ও প্রেসার কম থাকায় ড্রাইং মিল গুলোর উৎপাদন প্রায় ৭০শতাংশ কমে গেছে।

প্রতিদিন গড়ে পিডিবি ১২/১৪ ঘন্টা এবং আরইবি ১৬/১৭ঘন্টা লোড শেডিং  দেয়া হচ্ছে। প্রতি দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। তাই আর্টি কম্পোজিট,স্পিনিং মিল, লাবিব মিল,কনজুমান নিটেক্স লিঃ  ও শেফার্ড ইয়াং ড্রাইং প্রায় ৩০টি ড্রাইং মিলে দিনের বেলা গ্যাসের লাইন চালু থাকলেও প্রেসার কম থাকায় মেশিন ঠিকমত চালাতে পাচ্ছেন না মিল কর্তৃপক্ষ। 

গ্যাসের অব্যাহত প্রেসার কম ও সন্ধ্যা থেকে সাড়া রাত সরবরাহ বন্ধ থাকায় এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা মল্লিকবাড়ি ইউনিয়েনের গাদুমিয়া গ্রামে অবস্থিত তাইপে বাংলা ফেব্রিক্স লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরোয়ার হোসেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্টিভিশন কোম্পানি লিঃ এর বরাবর ১০পিএসআই গ্যাস সরবরাহ করার জন্য আবেদন করেন। আগে গ্যাসের বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মিল চালানো হতো। গ্যাসের চাপ কম থাকলে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ অথবা ডিজেল চালিত জেনারেটারের মাধ্যমে মিল চালানো হতো। 

বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কট ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় উৎপাদন খরচ ব্যাপক হারে বেড়েছে। সাড়ে ৩শত শ্রমিকের একটি মিলে আগে সারা দিনে বিদ্যুতের জন্য ১/২লিটার ডিজেল লাগতো। বর্তমানে গড়ে ১৬/১৭শ লিটার তেল লাগছে। ভালুকায় ভারি ভারি অনেক কোম্পানিতে ১০থেকে ১২হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। 
 
তাইপে বাংলা ফেব্রিক্স লিঃ এর ডিজিএম আশিকুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ সঙ্কট থাকায় আমাদের ২৭টি মেশিন এর মাঝে ২/১টি করে মেশিন চালু রেখেছি। ফলে সঠিক সময় মাল উৎপাদন করতে পারছিনা ফলে ভায়ারদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ হচ্ছে। এ কোম্পানিটি শতভাগ রপ্তানিমুখি। কোম্পানিটি বন্ধ হলে প্রায় ৮শত শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। আমাদের এ মাসে শ্রমিকদের বেতন দেয়া কষ্ট হবে। 
শেফার্ড গ্রুপের

জিএম মোকলেছুর রহমান জানান, এ মিলটি শতভাগ রপ্তানি মুখি। বর্তমান সঙ্কটের জন্য এ মিলের উৎপাদন ৭০শতাংশ কমে গেছে। বিদেশি মিল মালিকরা শ্রমিকদের বেতন ভর্তুকি দিয়ে মিল চালাচ্ছেন। এ সমস্যা অব্যাহত থাকলে ছোট খাট অনেক মিল বন্ধ হয়ে যাবে।
আর্টি কম্পোজিটের মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান,বর্তমান সঙ্কট  অব্যাহত থাকলে আমার মতো অনেক মালিকরা বধ্য হবেন তাদের মিল বন্ধ করে দিতে।

ভালুকা পিডিবি কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এজেডএম আনোয়ারুজ্জামান জানান,আজকে ভালুকায় ১৭ থেকে সাড়ে ১৭মেগাওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। আজকে পেয়েছি মাত্র সাড়ে ৬মেগাওয়ার্ড।

তিতাস গ্যাস ডিস্টিভিশন লিঃ ভালুকা আ লিক কার্যালয়ের ম্যানেজার প্রকৌশলী মুনঞ্জুর আহাম্মেদ জানান,আগে আমাদের মেইন লাইনে পিএসআই ছিল ১২০/১৩০ বর্তমানে আছে ৩০/৪০পিএসআই। যারা মেইন লাইনের কাছে আছেন তারা পিএসআই বেশি পান। আর যারা দূরে আছেন তারা কম পাচ্ছেন। রাতে বেলা লাইনের গ্যাস বন্ধের বিষয়ে বলেন, অপারেশন বিভাগ থেকে লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়।

আরএক্স/