খুলে যাচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশদ্বার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


খুলে যাচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশদ্বার

টানা তিন মাস প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকার পর, মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে খুলে দেওয়া হচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশদ্বার। মন্ত্রীপরিষদের নির্দেশে গত ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ রেখেছিল বন মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকেই দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা সরকারি নিয়ম মেনেই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। নৌকা, জালসহ অন্যান্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিয়ে অধীর আগ্রহে বসে আছেন মৎসজিবী ও বনজীবীরা।পারবেন। নৌকা, জালসহ অন্যান্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিয়ে অধীর আগ্রহে বসে আছেন মৎসজিবী ও বনজীবীরা। 

পর্যটক বরণ করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো। ট্যুর অপারেটরগন শুরু করেছে ইতিমধ্যে বুকিং নেওয়া। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সুন্দরবনে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ঢল নামবে বলে বন বিভাগ ও ট্যুর অপারেটরদের প্রত্যাশা।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। প্রাকৃতিকভাবে এটি লবণাক্ত বনাঞ্চল। প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই সুন্দরবনটি দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। 

পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে।
 
ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। সুন্দরবনে পর্যটকদের জন্য ৭টি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার পর্যটক ভ্রমন করেন। এ ছাড়াও পর্যটকদের জন্য নতুন করে আরো ৪টি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরী করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের অধিকাংশ প্রানীর প্রজনন হয়। 

ওই সময়ে বন্য প্রানীদের যাতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকে। সঙ্গত কারণেই মন্ত্রীপরিষদের নির্দেশে গত ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ রেখেছিল বন মন্ত্রণালয়।

ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আলম ডেভিড বলেন, আমরা পর্যটকদের কাছ থেকে অগ্রিম বুকিং নেওয়া শুরু করেছি। ১লা সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের সুন্দরবনে ভ্রমন করতে কোন বাধা থাকবে না।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, স্থল ভাগের সবথেকে কাছে হওয়ায় সুন্দরবনের করমজলে মোট পর্যটকের ৯০ শতাংশ ভ্রমন করে। দীর্ঘদিন পর আবারও পর্যটকে সরগরম হবে করমজল। এলাকাটি পরিস্কার পরিছন্ন করা পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, পুরো সুন্দরবন সংরক্ষিত এলাকা। যে কেউ চাইলে সেখানে যেতে পারে না। প্রবেশের আগে সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করে অনুমতি নিতে হয়।বুধবার (৩১ আগষ্ট) থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। ১লা সেপ্টেম্বর থেকে আবারও বনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। 

সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণের জন্য প্রায় ১২ হাজার নৌকাকে বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) দেওয়া হয়েছে। তাতে করে প্রায় দেড় লাখ বনজীবী সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণ করতে পারবেন।

আরএক্স/