গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি: কৃষকের ভরসা কচুরিপানা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি: কৃষকের ভরসা কচুরিপানা

গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপাকে পড়েছেন রামগঞ্জ উপজেলার খামারি ও সাধারণ কৃষকেরা। একটি গরুর পেছনে ব্যয় করে কোরবানির সময় পাওয়া যাচ্ছে না তেমন দামও। হিসেব-নিকেষ করে তেমন লাভের মুখ না দেখলেও এককালীন কিছু টাকা পাওয়া যায় তাতেই সাধারণ কৃষকের সান্তনা!

গরুর খাদ্যের মধ্যে অন্যতম খড়-কুটাসহ অন্য খাদ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনটাই জানালেন রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গরুর খামারিরা। তাই রামগঞ্জ উপজেলায় কৃষকের গবাদিপশুর খাদ্য ঘাটতির জন্য কচুরিপানায় একমাত্র ভরসা। এখানে বর্ষার শুরুতেই পুকুর, খালবিল, নদীনালা, পানিতে ভরে যায়। ফলে গবাদিপশু সবুজ ঘাসের খাদ্য সংকটে পড়ে। তাছাড়া খড়, খৈল, ভুসি ইত্যাদি ক্রয়কৃত খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় কৃষক চরম বিপাকে। তাই গবাদিপশুকে বাঁচিয়ে রাখতে বা সবুজ ঘাসের ঘাটতি মেটাতে কচুরিপানাকেই প্রধান উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাই উপজেলার খালবিল, নদীনালায় ভেসে আসা কচুরিপানা রোদ বৃষ্টিতে ভিজে কৃষকেরা সংগ্রহ করে গবাদিপশুর খাদ্যের জন্য। 

রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, আগামী বছরের কোরবানির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন খামারিরা। কারো রয়েছে দুগ্ধজাত খামার আবার কেউ শুধুমাত্র ঈদ ও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পালন শুরু করেছেন গরু। এসব খামারে সংকট রয়েছে গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়-কুটা, ভূষি, খৈলসহ আরো অনেক খাদ্য। ‘যেভাবে গোখাদ্যের দাম বাড়ছে তাতে আর গরু পালন করা সম্ভব হবে না হয়ত। খামারের গরুগুলোকে এক মাস আগে যে খাবার দিয়েছি এখন তার অর্ধেক পরিমাণে দিচ্ছি। এতে গরু কাহিল হলেও আমার আর কিছুই করার নেই।’ ১৫ দিন আগে ৩৫ কেজি ওজনের গমের চালের দাম ছিল এক হাজার ১১শ’ টাকা সে ছালের দাম হয়েছে ১৯শ’ টাকা। অনেকে বাধ্য হয়েই সাধ্যমতো খড়ের আটি কিনছেন।

১শ খড়ের আটি সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ফিড প্রকার ভেদে সাড়ে ৭০০ থেকে ১৩৫০ টাকা ও গমের ভুষি প্রকার ভেদে প্রতিবস্তা ১৮০০/১৯০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

চাষিরা জানান, ছয়মাস আগে একবস্তা ভালোমানের গমের চাল বিক্রি হয়েছে ১২০০-১২৫০ টাকায়। যা এক বছর আগে ছিল ৯৫০-১০০০ টাকা। একইভাবে ছয় মাস আগে মাসকলাইয়ের ভুসির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৪৫০ টাকায়। এক বছর আগে ছিল ১১০০-১২০০ টাকা। এক বছর আগে এক বস্তা খৈল বিক্রি হয়েছে ২৫০০-২৬০০ টাকায়। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৩৩শ’-৩৪শ’ টাকা। ছয়মাস আগে ডালের ভুসির বস্তা ছিল ১২শ’ টাকা, অ্যাংকর ডালের ভুসি ৮শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। এরপরও ধীরে ধীরে গো-খাদ্যের দাম বাড়ছিল। কিন্তু গত ১৫ দিনে দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

জেবি/ আরএইচ/