সিদ্ধিরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২২
শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে শ্লোগান দিতে থাকে
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে শ্লোগান দিতে থাকে।
আজ সোমবার ক্লাস বর্জন করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চাষাড়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক হাফিজুর রহমান ও পরিদর্শক হাবিবুর রহমানসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রীদের বুঝিয়ে বিদ্যালয়ের ভেতরের মাঠে নিয়ে যায়। পরে বেলা ২ টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে এবং তার অপসারন দাবি জানান।
এ সময় কয়েজন শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, রফিক স্যার যখন ক্লাসে যান তখনি কৌশলে আমাদের শরীরে হাত দেন। আমরা শ্রেণি কক্ষে পড়া দিতে না পারলে তিনি আমাদের ছবি তার মোবাইলে তুলে নিয়ে যেতেন। কখনো পড়া না পাড়লে তিনি আমাদের হাত দিয়ে শরীরে থাপ্পর দিতেন। আমরা চাই না আমাদের আর কোনো বোন তার দ্বারা হয়রানীর শিকার হোক। তার মতো শিক্ষক আমরা এ বিদ্যালয়ে চাই না। আমরা তার পদত্যাগ চাই।
এসময় শিক্ষার্থীরা নাসিকের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে আমরা আন্দোলন করলে তিনি নাকি আমাদের পরীক্ষা দিতে দিবে না। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন কথা কীভাবে বলেন? তিনি আমাদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন আমরা যেনো না করি।
এ বিষয়ে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম জানায়, আমি একজন মা এবং ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা আমারই মেয়ে। তাদেরকে হুমতি তো প্রশ্নই আসে না। আমি ছাত্রীদের বিক্ষোভের কথা শুনে ঘটনাস্থলে যাই। এবং তাদের অভিযোগ শুনে দুই দিন সময় চাই। যাতে করে বিষয়টি নিয়ে সকলের সাথে কথা বলে সমাধান করা যায়। কিন্তু তারা আমার সেই কথা না রেখে রাস্তায় গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তখন আমি আর সেখানে না থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন চলে আসি মাসিক সভায় যোগদানের জন্য।
সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের কেউ প্ররোচিত করে এই বিক্ষোভে বাধ্য করেছে। তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের করা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি জানান।
সাবেক শরীর চর্চা বিষয়ক শিক্ষিকা সুমিতা নাথ, গানের শিক্ষিকা শাহীন চৌধুরী, ইংরেজী শিক্ষিকা ফরিদা আক্তার, সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষিকা শাসচ্ছুন্নাহার শিলা সাংবাদিকদের জানান, আমরা কখনো প্রধাণ শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের করা অভিযোগের বিষয়টি জানতে পারিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.এস.এম অফিসার আবু তালেব সাংবাদিকদের জানান, আমরা ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই বিদ্যালয়ের দুজন খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন সোহেল ও বিল্লাল নামে। গত রবিবার তারা পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে চাকরি ছেড়ে দেয়। সেই শিক্ষকদের আবার ফেরত আনার জন্য ছাত্রীরা দাবী করেছে। আমরা পুরো বিষয়টিই তদন্ত করে দেখবো। এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেবি/ আরএইচ/
বিজ্ঞাপন
