পারিবারিক জীবনে রসুল (সা.)-এর আদর্শ
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭:১০ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২২
মাওলানা মাহমুদ হাসান তাসনীম: মানবজীবনের সব ক্ষেত্রেই আছে রসুল (সা.)-এর আদর্শ। ইবাদত-বন্দেগি থেকে শুরু করে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও তিনি মানব জাতির সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর পারিবারিক জীবনে রয়েছে মুসলিম উম্মাহর জন্য এমন দিকনির্দেশনা যার বাস্তবায়নেই কেবল একটি সুখী পরিবার লাভ করা সম্ভব। তাঁর পারিবারিক জীবনের কিছু অনুপম দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হলো।
ঘরে যেভাবে থাকতেন : রসুল (সা.) ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত নম্র, ভদ্র, কোমল স্বভাবের ছিলেন। সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। অযথা রাগ ও ক্রোধ থেকে বিরত থাকতেন। কঠোর ভাষী ছিলেন না। সব বিষয়েই ক্ষমাকে প্রাধান্য দিতেন। হাসিমুখে কথা বলতেন। কাউকে কোনো কাজের জন্য বাধ্য করতেন না। নিজের কাজ নিজেই করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) মানবসন্তানেরই একজন ছিলেন। তিনি নিজেই নিজের কাপড় সেলাই করতেন। ছাগলের দুধ দোহন করতেন। ব্যক্তিগত কাজকর্মও নিজ হাতে করতেন। তিরমিজি।
সন্তানাদির প্রতি স্নেহ : তিনি সন্তানদের খুব স্নেহ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ফাতিমা (রা.) যখন রসুল (সা.)-এর কাছে আসতেন, তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং ফাতিমার হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে চুম্বন করতেন এবং নিজের আসনে বসাতেন। অনুরূপভাবে তিনি যখন ফাতিমা (রা.)-এর কাছে যেতেন, ফাতিমা (রা.) উঠে দাঁড়াতেন, তাঁর হাত ধরতেন, হাতে চুম্বন করতেন এবং নিজের বসার স্থানে তাঁকে বসাতেন। আবু দাউদ।
পরিবারের লোকদের সংশোধন : তিনি পরিবারের সদস্যদের সংশোধনের ব্যাপারে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। তাদের দীনদারির প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। কখনো তাদের কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতেন না। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রসুল (সা.)-কে বললাম, সাফিয়্যাহের ব্যাপারে আপনার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে এরূপ অর্থাৎ সে খাটো। তিনি বললেন, তুমি এমন একটি কথা বলেছ যা সমুদ্রে মিশিয়ে দিলে তাতে সমুদ্রের পানির রং পাল্টে যাবে। আবু দাউদ, তিরমিজি।
স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণ : রসুল (সা.) একজন আদর্শ স্বামী ছিলেন। তাঁর সীমাহীন দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যপরায়ণতার কারণে স্ত্রীদের কাছে খুব প্রিয় ছিলেন তিনি। তিনি স্ত্রীদের প্রতি খুব যত্নশীল ছিলেন। নিয়মিত সব স্ত্রীর খোঁজ নিতেন এবং সবার সঙ্গে সময় কাটাতেন। সাংসারিক কাজে তাদের সহযোগিতা করতেন। তাদের সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতুকও করতেন। তাদের কেউ কখনো অভিমান করলে বা মন খারাপ করলে তাকে সমবেদনা জানাতেন। তাদের সঙ্গে নানা খুনসুটিও করতেন। তাদের আবেগ- অনুভূতির মূল্যায়ন করতেন। বৈধ আবদার রক্ষা করতেন। মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনি বলতেন, খোশগল্প করতেন।
খাদেমদের সঙ্গে আচরণ : আনাস (রা.) বলেন, আমি ১০ বছর রসুল (সা.) এর খেদমত করেছি। তিনি আমার কোনো আচরণে বিরক্ত হয়ে কখনো উঃ বলেননি এবং কখনো বলেননি যে অমুক কাজ কেন করলে? অমুক কাজ কেন করলে না? মুসলিম। আল্লাহ আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
জেবি/ আরএইচ/