কক্সবাজারের রামুতে দুই যুবককে এসিড নিক্ষেপ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, ২৭শে অক্টোবর ২০২২


কক্সবাজারের রামুতে দুই যুবককে এসিড নিক্ষেপ
ছবি: জনবাণী

কক্সবাজারের রামুতে দুই যুবককে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে রামু চৌমুহনী ভিক্টর প্লাজার সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।


ভুক্তভোগীরা হলেন দ্বীপ শ্রীকুলের নিরধন বড়ুয়ার ছেলে টিপু বড়ুয়া (৩৪) ও শুভধন বড়ুয়ার ছেলে দিপক বড়ুয়া (৩৩)। এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ভুক্তভোগী টিপু বড়ুয়া (৩৪) জানান, চৌমুহনীতে তার মটর সার্ভিসিং এর দোকান বন্ধ করে আরেক সহযোগী দিপক বড়ুয়াসহ দ্বীপ শ্রীকুল যাওয়ার পথে ভিক্টর প্লাজার সামনে গেলে একটি সিএনজিযোগে পাঁচ-ছয় জন অজ্ঞাত লোক এসে মুহুর্তেই এসিড নিক্ষেপ করে দ্রুত পালিয়ে যায়।


এদিকে এসিড নিক্ষেপের পর পর স্থানীয়রা এই যুবককে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে দুই যুবকের অবস্থা আংশাজনক বলে জানান স্বজনেরা।


এর আগে গতমাসেও এই দুই যুবকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। রামু মৈত্রী বিহারের সামনে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এই দুই যুবককে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। সে ঘটনায় রামু থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা হলেও এখনও পর্যন্ত ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি রামু থানা পুলিশ।


ঘটনার বিষয়ে জানতে রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসিড নিক্ষেপের ঘটনা এখনো আমরা জানি না। ঘটনার বিস্তারিত জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আহতদের ভগ্নিপতি নিকেল বড়ুয়া নামের এক পুলিশ সদস্য পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে একের পর  ঘটনা ঘটাচ্ছেন।


এসিড সন্ত্রাসের শিকার আহত টিপু বড়ুয়া জানান, তার ছোট বোন ইমু বড়ুয়ার সঙ্গে ২০১৬ সালে  হাজারীকুল গ্রামের মৃত প্রদীপ বড়ুযা ছেলে পুলিশের কনেস্টেবল নিকেল বড়ুয়া বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার বোনের সাথে পারিবারিক কলহ লেগে আছে। এক পর্যায়ে সে  ২০১৯ সালে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এবং তাকে বিয়ে করে। পরে আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে ওই মেয়েকে আপোষ মিমাংসা করে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে আমার বোন তার সঙ্গে আছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই।


টিপু আরও বলেন, এর পর থেকে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সে আমাকে হত্যার জন্য একের পর এক হামলা করছে। ছুরিকাঘাতের মাসখানেক আগে তার গ্রামের রিপন ও কলঘর বাজারের বেলাল নামের দুই বখাটে আমার ঘরে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। এর একমাস পর ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। এর মাত্র ৩৮ দিনের মাথায় আবার আমরা দুজনকে এসিড নিক্ষেপ করা হলো।


তবে অভিযুক্ত নিকেল বড়ুয়া ঘটনার পুরোটাই অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে যাব। আমার মা মারা গেছে, আজ সাপ্তাহিত সংঘদান ছিল। আমি এসব নিয়ে ব্যস্ত।


নিকেল বড়ুয়া বর্তমানে সিআইডি চট্টগ্রাম বিশেষ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিআইড’র বিশেষ পুলিশ সুপার মো.শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, নিকেল বড়ুয়া মায়ের মৃত্যুর কারণে বর্তমানে ছুটিতে আছে। তবে ছেলেটি একটু অন্য রকম। তার ব্যাপারে এ রকম আরও অভিযোগ আছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। এছাড়াও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকেলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।


আরএক্স/