শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, ২৮শে অক্টোবর ২০২২
ভালো দাম পাওয়ার আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের কৃষকরা। এখন তারা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সবজি ক্ষেতে। বীজ বপন থেকে শুরু করে চারা গাছ লাগানো, সার-কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সবাই।
উপজেলার বাংলাবাজার,নরসিংপুর, বোগলাবাজার, লক্ষীপুর,সুরমা,দোয়ারাবাজার সদর,মান্নারগাও, পান্ডারগাও ও দোহালিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে- মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শিম, লালশাক, ঢেঁড়শ, ধুন্দুল, করলা, পালংশাক, পুঁইশাক, বরবটি, লাউ, কুমড়া। কৃষকরা শীত আসার আগেই এসব সবজি বাজারে নিয়ে আসতে চান। আর চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর এসব সবজি বাজারজাত করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।
উপজেলা বাংলাবাজার ইউনিয়নের ঘিলাতলী,রামসাইরগাও, কলাউড়া,বাশতলা, ঢালিয়া,পাইকপাড়া ও উস্তিংগেরগাওসহ বেশ কিছু এলাকায় দেখা যায়, মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। কেউ সার ছিটচ্ছেন, কেউ মাটি দিচ্ছেন, কেউবা সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো লাভ পাবেন বলে আশাবাদী চাষিরা।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে চিচিঙ্গা, লাউ, চষা ও বেগুনের ভালো ফলন হয়েছে। আগাম শীতকালীন সবজি হিসেবে এসব সবজি বাজারে ওঠা শুরু করেছে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো দামে।উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ঘিলাতলী,রামসাইরগাও, কলাউড়া,বাশতলা, ঢালিয়া,পাইকপাড়া ও উস্তিংগেরগাওসহ বিভিন্ন এলাকায় সারাবছর ধরে শাক-সবজির চাষ হয়। তবে শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে আগাম শীতের সবজি আবাদ হয় ব্যাপক হারে। উপজেলার সবচেয়ে বড় সবজির হাট বাংলাবাজার । সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার হাটবার হকেও প্রতিদিন সকালে বসে সবজিবাজার। স্থানীয় কৃষকরা সরাসরি হাটে তোলেন কৃষিপণ্য। এসব পণ্য এখানে পাইকারি দরে বিক্রি করেন তারা।
ঘিলাতলী কৃষক সেলিম মিয়া জানান, শীতের শুরুতে শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারলে দাম ভালো পাওয়া যায়। পাশাপাশি বাজারে চাহিদা থাকার কারণে তিনি এ বছর শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ, শিম ও বেগুনের চাষ করেছেন। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহরে মধ্যে এসব আগাম সবজি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর জানান, প্রতি বছর তিনি শীতকালীন সবজি চাষ করে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন। এ বছর তিনি আট একর জমিতে শসা ও টমেটো চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে গত বছরের তুলনায় এ বছর তিনি বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
কৃষক আব্দুল হাশেম জানান, তিনি এক একর জমিতে লাউ চাষ করেছেন। এতে তার ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে বাজারে লাউ বিক্রি শুরু করেছেন। প্রায় ১২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন তিনি। ক্ষেতে যে পরিমাণ লাউ রয়েছে তাতে খরচ বাদে আরো ৬০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের হিসাব মতে এ বছর দোয়ারাবাজারে আগাম শীতকালীন সবজিসহ মৌসুমি সবজি চাষ হয়েছে ১ হাজার ২শত ৮৫হেক্টর জমিতে। এর আনুমানিক বাজার মূল্য ৪০কোটি টাকারও বেশি হবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মহসিন বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারো উপজেলার কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এবার উপজেলায় মোট এক পাঁচ হাজার ২শত ৮৫হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করেছে। এ সবজি আগামী দুই মাসের মধ্যে বাজারজাত করা যাবে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।
আরএক্স/