জমি নিয়ে বিরোধে ভাতিজির হাতে প্রাণ গেল চাচার


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:১৭ অপরাহ্ন, ১লা নভেম্বর ২০২২


জমি নিয়ে বিরোধে ভাতিজির হাতে প্রাণ গেল চাচার
প্রতীকী ছবি

ঢাকার ধামরাইয়ে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে সংঘর্ষে ভাতিজির হাতে চাচার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে নিহতের স্ত্রী।


মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ভাবনহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত ইউনুস আলী (৫০) ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ভাবনহাটি গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানা গেছে। আহত সাফিয়া বেগম নিহত ইউনুস আলী স্ত্রী।


অভিযুক্তরা হলো- কুসুম আলী (৬৫), লাখি বেগম (৩৭), উসমান (২০) ও আবু বক্কর(১৮), কুসুম আলীর স্ত্রী নয়ন ভানু (৬০), কুসুম আলীর ছেলে ইউসুফ (২৪) ও মেয়ে লিপি আক্তার (৩২) সহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জন। উভয় উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ভাবনহাটি গ্রামের বাসিন্দা।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- নিহত ইউনুস ও কুসুম আলী আপন দুই ভাই। বড় ভাই কুসুম আলীর কোন সন্তানাদি না হলে সাটুরিয়া বাজারে কুঁড়িয়ে পাওয়া এক শিশুকে দত্তক নেয়। নাম রাখা হয় লাখি আক্তার। দত্তক নেওয়ার কয়েক বছর পরে কুসুম আলীর ঘরে ৩টি সন্তান জন্ম নেয়। লাখি আক্তার বড় হলে বিয়ে দিয়ে নিজ গ্রামেই রেখে দেয় তাকে। মাঝেমাঝেই দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া লাগার কারণ হয়ে দাঁড়ায় অভিযুক্ত লাখি। কয়েকদিন আগেও ইউনুস আলীর বাক প্রতিবন্ধী ছেলেকে মারধর করে। সেই মারধরের ঘটনায় আজকে সন্ধ্যায় স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করার কথা ছিলো। কিন্তু লাখি বেগম খুব উগ্র মেজাজী। আজ সকালে আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করতে গিয়ে লাগি ও তার পরিবার ইউনুস আলী পিটিয়ে হত্যা করে। এবং ইউনুস আলীর স্ত্রীকে গোপনাঙ্গে আঘাত করে গুরুতর আহত করে।


নিহতের স্বজন সাত্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউনুসের ভাইয়ের সাথে তার জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত এক সপ্তাহ আগে ইউনুসের বাক প্রতিবন্ধী ছেলেকে মারধর করে কুসুম আলীর পরিবার। সেই ঘটনা নিয়ে ইউনুস থানায় মামলা করতে চেয়েছিল। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করে দিবে বলে মামলা করতে না করে। আজ সন্ধ্যায় বিচার সালিশের মাধ্যমে মারধরের ঘটনা মিমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু আজ সকালেই দুই পরিবারের মধ্যে মারামারির সময় ইউনুস মারা যায়। এসময় গুরুতর আহত হয় ইউনুসের স্ত্রী সাফিয়া বেগম। সাফিয়াকে বাঁচাতে গিয়েই তার স্বামী নিহত হয়। বাকি আহতরা সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।


নিহতের স্ত্রী সাফিয়া বেগম জানান, সকালে দাঁত ব্রাশ করার সময় দেখে সাফিয়ার রান্না করার লাকড়ি নিয়ে যাচ্ছে কুসুম আলীর পরিবার। পরে লাকড়ি নিতে বাঁধা দিলে সাফিয়াকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। আঘাতের কারণে চিৎকার করলে সাফিয়ার স্বামী ইউনুস আলী স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। এসময় ইউনুসকেও বেধরক মারধর করে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইউনুস আলী। গুরুতর আহত হয় সাফিয়া বেগম।


ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত একটি ঘটনা নিয়ে ইউনুস আলী নামে একজন মারা গেছে। এবং একজন আহত হয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন ও আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান।

জেবি/ আরএইচ/