এক সাথে এইচএসসি পরীক্ষায় বসলেন মা-মেয়ে


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, ৭ই নভেম্বর ২০২২


এক সাথে  এইচএসসি পরীক্ষায় বসলেন মা-মেয়ে
ছবি: জনবাণী প্রতিনিধি

মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মা মারুফা আকতার এবার মেয়ের সাথে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে । মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আর মা মারুফা আকতার একই কলেজের বিএম শাখা থেকে। নীলফামারীর ডিমলায় বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারা দুজনেই উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন ।


এর আগে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় একসাথে অংশ নিয়ে মেয়ের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মা। মা মারুফা আকতার পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৬০ এবং শাহী সিদ্দিকা  জিপিএ ৩ দশমিক ০০। 


জানা যায়, ২০০৩ সালে বিয়ের পর বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। পিঠাপিঠি চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতেই ১৫টি বছর চলে গেল। সচরাচর কোনো কিশোরীর লেখাপড়ার ইচ্ছেশক্তি আর এত বছর বাঁচে না। কিন্তু মারুফা আক্তার দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে জয় করা যায়। তিনি এবার নিজের মেয়ের সঙ্গেই এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। 


মারুফা আক্তারের বাবার বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা নাউতারা গ্রামে। বিয়ে হয় একই  উপজেলার খালিশা চা পানি ইউনিয়নের পুন্যারঝার গ্রামে । স্বামী সাইদুল ইসলাম। পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বড়। দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেণী,তৃতীয় মেয়ে অষ্টম শ্রেণী ও ছোট মেয়ে পন্ঞ্চম শ্রেনীতে পড়াশোনা করছেন।


নতুন করে পড়াশোনা শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে মারুফা আক্তার জানান, ২০০৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার প্রতি তাঁর খুব আগ্রহ ছিল। কিন্তু পরীক্ষার আগেই বিয়ে হয়ে যায়।তখন তিনি দশম শ্রেণীর ছাত্রী। বিয়ের পর চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবার সময়ই হয়নি।পরে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও স্বামী ও সন্তানদের অনুপ্রেরণায় নবম শ্রেণি থেকে শুরু করতে হলো তাঁকে।ভর্তি হন ছোটখাতা ফাজিল মাদ্রাসায়। সেবার মেয়েও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এরপর ২০২০ সালে মেয়ের সাথে এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন।


এই বয়সে এসেও কেন পড়াশোনা করতে চাইলেন, জানতে চাইলে মারুফা বলেন, সমাজের আর দশটা মানুষের মতো আমিও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে নিজের পরিচয় দিতে পারি। এ জন্যই কষ্ট করে পড়াশোনাটা আবার শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে এইচএসসি পাশ করে দেশের ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার।


মারুফা আক্তারের স্বামী সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি তার ইচ্ছেটার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করবো।


আরএক্স/