ধামরাইয়ে ছেলে নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন বৃদ্ধ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৩০ অপরাহ্ন, ২০শে নভেম্বর ২০২২


ধামরাইয়ে ছেলে নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন বৃদ্ধ
ছবি: জনবাণী

‌‌‘ঢাকার ধামরাইয়ে নাতিকে বাঁচাতে এসে জীবন দিলেন এক বয়োবৃদ্ধ দাদা। কুশুরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মো. জয়নুদ্দিন (৫৫) নামে বৃদ্ধকে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।


শুক্রবার ( ১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত জয়নুদ্দিনের বাড়ী উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের টোপেরবাড়ী গ্রামে। সে ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ স্বপন বেপারীর ছেলে।


এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, বিকাল বেলা আসিফ ও ইমরানকে ডেকে ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে একটি কক্ষে নিয়ে বেধর মারপিট করেন ইউপি সদস্য বাবু ও রনি। এই সময় খবর পেয়ে আসিফের বাবা শুকুর আলী দৌড়ে গিয়ে জানতে চায় কি কারণে তার ছেলেকে পরিষদের ভিতরে আটকিয়ে মারধর করা হয়েছে। এসময় রনি মিয়া ওই শুকুর আলীকেও পরিষদের কক্ষে নিয়ে মারধর করে। সেখানে আসিফের দাদাকে দেখে আরও উত্তেজিত হয় ওরা। পরে সেখানে হাতাহাতির একপর্যায়ে জয়নুদ্দিন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন জয়নুদ্দিনকে উদ্ধার করে ধামরাই সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।


মারধরের বিষয়ে শুকুর আলীর কাছে জানতে চাইলে তখন শুকুর আলীর ফোনে একটি কল আসলে কথা বলতে থাকেন। ফোনে কথা বলার পরে তিনি আর কিছুই বলেনি। বিস্মিত কণ্ঠে বিভিন্ন ব্যাস্ততার অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।


কুশুরা ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা আসাদুজ্জামান রনি বলেন- একজনের বাপে অদের দুই জনকে নিয়ে বাজারে আইসা আমার সাথে তর্কাতর্কি করছে। সে বলে আমার ছেলে কে তুমি এইটা বলার কি? সো যা খুশি তাই করবে। আমার সাথে টুকটাক হাতাহাতি হইছে। আমার সাথে অনেক পোলাপান টুলাপান ছিল, ওদের একটা করে থাপ্পড় করে দিলেও মইরা যাইবো। পরে বাবু ভাই বাচানোর জন্য ওদের নিয়ে গেছে ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে। ইতোমধ্যে ওদের চাচা আইসা খুব চেতাচেতি করছে। বাবু ভাই এর দুরত্ব কমপক্ষে চার ফুট। তার সাথে কোন টাচই হয় নাই। চেতাচেতি করতে করতে ঢইলা পইরা গেছে। আমরাই ধরাধরি করে পানি দিয়েছি মাথায়। অই জায়গায় থেকে হসপিটালে নেওয়ার পর মারা গেছে।


ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন- কুশুরা আমাদের দুই ছাত্র দলের নেতাকে, আটকিয়ে রেখে বাবু আর রনি অমানুষিক অত্যাচার করছে। তখন তারে উদ্ধার করতে আইসা শুকুরের চাচা (ছাত্র নেতার দাদা) তাকে ধাক্কাইয়া ফালাইয়া মাইরা ফেলছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।


এবিষয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন- নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।,


আরএক্স/