বদরগঞ্জে মর্ডান হারবাল ওষুধের ব্যবসার জন্য,

যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৯ এএম, ২৪শে নভেম্বর ২০২২


যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন
ছবি: জনবাণী

রংপুরের বদরগঞ্জে মর্ডান হারবাল ওষুধের ব্যবসার জন্য শ্বশুড় বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য দীর্ঘদিন থেকে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিলেন এক পাষন্ড স্বামী। অবশেষে তার দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় স্ত্রীকে অমানবিক নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে তালাকের হুমকি দেন তিনি। 


ঘটনাটি ঘটেছে বুধরার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের যাদু নগর মহল্লায়। জানা যায়, বদরগঞ্জ পৌর শহরের শাহাপুর মাস্টারপাড়া মহল্লার মাহবুবার রহমান হেলালের কলেজ পড়ুয়া কন্যা মোছা. সালমা খাতুন এর সাথে বিগত ১১ অক্টোবর ২০১৩ সালে দুই লক্ষ একশত এক টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে ইসলামী শরাহ্ শরীয়ত ও রেজিস্ট্রী কাবিনমুলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ হয় পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ড যাদু নগর মহল্লার আ. হামিদের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের। বিবাহের পর মেয়ে জামাতার দাম্পত্য জীবন সুখময় ও কল্যাণার্থে নগদ উপঢৌকন স্বরুপ দুই লক্ষ টাকাসহ ঘরের আসবাবপত্র ও অলংকারাদি প্রদান করেন মেয়ের বাবা।

 

এবিষয়ে গৃহবধূ সালমা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই স্বামী সাদ্দাম হোসেন তার বাবা আঃ হামিদ, মা সুফিয়া বেগম,বড় ভাই সোহেল রানা, বড় বোন হোসনেয়ারা বেগম হ্যাপি ও খাদেমুল ইসলাম আমার স্বামীকে উষ্কানী দিয়ে বলেন, তোর স্ত্রীকে বল সে যেন তার বাপের বাড়ী থেকে মর্ডান হারবাল ওষুধের ব্যবসার জন্য দুই লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে আসে। 


অসহায় বাবার পরিবারের কাছ থেকে দাবীকৃত যৌতুকের দুই লক্ষ টাকা আনতে অস্বীকার করায় সালমা খাতুনের উপর শুরু হয় দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরইমধ্যে যৌতুকের টাকা না দিতে অস্বীকার করা সালমা খাতুনকে প্রায় তালাক দেওয়ার হুমকি দিতেন অর্থলোভী স্বামী সাদ্দাম হোসেন। সালমা খাতুনের বাবা মাহবুবার রহমান হেলাল বলেন, আমার মেয়ের ঘর সংসার করাকালে একটি কন্যা সন্তান ও একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। 


জামাই সাদ্দাম হোসেন মডার্ন হারবাল এর ব্যবসা করে তাই অসৎ প্রকৃতির মনোভাব নিয়ে আমার মেয়ে সালমা খাতুনকে নিঃসন্তান করবে বলেই গর্ভাবস্থায় নিজে হারবালের ঔষধ আমার মেয়ে জোর করে খাওয়ায়। ফলে আমার মেয়ের সন্তান দু'টি অকালে মৃত্যুবরণ করে। আমার মেয়ে সন্তানের শোকে কাতর হলে আমার মেয়ের উপর প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। 


কিন্তু শত অত্যাচার করা শর্তেও নিরবে সংসার করে আসছিল সে।  বর্তমানে তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বেরকরে দিয়েছে তারা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও যৌতুকলোভী স্বামীর সাদ্দাম হোসেন সর্বশেষ পৌরসভায় শালিস বৈঠকে উপস্থিত হন। সেখানে সাদ্দাম হোসেন প্রকাশ্যে সকলের সামনে বলেন ওই মেয়েকে নিয়ে সংসার কা সম্ভব নয়। 


সেখানে শালিস পন্ড হলে সালমা খাতুনের বাবা বদরগঞ্জ থানায় যৌতুকলোভী জামাই সাদ্দাম হোসেনসহ ৬জনের নামে নারী নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ করার পর থেকে প্রতিনিয়ত অসহায় পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে যৌতুকলোভী স্বামী সাদ্দাম হোসেনসহ তার লোক জন হুমকি ধামকিসহ নানা রকম ও হয়রানী করছে। বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, বাদীনির অভিযোগ পেয়ে তদন্তর জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে দোষীদেও বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আরএক্স/