স্বামী মারা যাওয়ার পর, দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে নারীকে সমাজচ্যুত


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, ১লা ডিসেম্বর ২০২২


স্বামী মারা যাওয়ার পর, দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে নারীকে সমাজচ্যুত
ছবি: জনবাণী

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামে স্বামী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে ৭ মাস ধরে তার বসত ঘরে তালা দিয়ে সমাজচ্যুত করেছে গ্রাম্য মাতব্বররা। 


বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে নির্যাতিত মহিলা হামিদা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে ঘটনার বিবরণ করেন। সমাজচ্যুত হামিদা বলেন, তার প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর এলাকার কিছু খারাপ চরিত্রের লোক তাকে কুপ্রস্তাব দিত। তাই তিনি বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার অপরাধে খাসপাড়া গ্রামের গ্রাম্য মাতব্বর ঈমান আলী, ফালান মিয়া, জালাল মিয়া ও সিরাজ মিয়াসহ ১৫/২০ জন মাতব্বর মিলে তার বসত ঘরে তালা দেন। 


৭ মাস ধরে তালাবদ্ধ ঘরের লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ঝড়াজীর্ণ অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে। আচ্যর্যজনক বিষয় হল তার ২টা শিশু বাচ্চা রুটি খাইতে বসছিল কিন্তু গ্রাম্য মাতব্বররা শিশুদেরকে ১ টুকরো রুটি খেতে দেয়নি। ঘর থেকে বের করে তালাবদ্ধ করে দেয়। দীর্ঘ ৭ মাসে তারা অন্যত্র বসববাস করছে এবং স্বামী স্ত্রী মিলে আমু চা বাগানের পুলপাড় নামক স্থানে একটি চায়ের স্টল দিয়ে জীবন যাপন করছে। 


এ ব্যাপারে হামিদার আপন বোন জ্যোৎস্না আক্তার বলেন, গ্রামের মাতব্বররা ডাকলে, হামিদা আসেনি তাই ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তার ঘরে তালা মারা হয়েছে। প্রতিবেশি সফিক মিয়া বলেন, মুরুব্বী ঈমান আলী ঘরে তালা দিয়েছেন, তাই সেই তালা তিনি ছাড়া কেউ খুলার সাহস রাখেন না। 


স্থানীয় আহম্মদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ বলেন, ঘটনাটি তিনি জানেন না। তবে যারা অতি উৎসাহী হয়ে এমন ন্যাক্কার জনক কাজ করেছেন তা আইন বিরোধী। অন্যায় করলে বিচার আছে, প্রচলিত আইনে হবে। ঘরে তালা মেরে অসহায় মহিলা ও বাচ্চাদের বের করে দেয়া কোন ভাবেই ঠিক হয়নি। 


অভিযুক্ত গ্রামের মুরুব্বী ঈমান আলীসহ কয়েকজন হামিদার ঘরে তালা বন্ধ করার কথা স্বীকার করে বলেন, তারা গ্রামবাসী একত্র হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজ করেছেন। অসহায় হামিদার কান্না শুনে তার বাসস্থান উম্মুক্ত করে স্বাধীন ভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করলেই হলো।


আরএক্স/