আবারও মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন


Janobani

আজাহারুল ইসলাম সুজন

প্রকাশ: ১১:৫২ অপরাহ্ন, ২১শে ডিসেম্বর ২০২২


আবারও মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন
মির্জা ফখরুল-আব্বাস

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় এবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হয়েছে।


তৃতীয় দফায় ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর এ আবেদন করেছেন তাদের আইনজীবীরা।


বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে জামিন আবেদন করা হয়েছে। আদালত শুনানির জন্য বিকেলে ৩টায় সময় নির্ধারণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।


ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম জামিন আবেদন করেছেন।আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী শেখ শাকিল আহম্মেদ রিপন ও জাকির হোসেন জুয়েল।


বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকা অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে জামিন আবেদন করে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেজবাহ । আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।


এরআগে, গত ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন করলে, ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত সকলের জামিন নামঞ্জুর করেন।


এদিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্য দিকে তাদের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন আবেদন করেন। এসময় আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। 


এরআগে ৯ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উত্তরার বাসা থেকে ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে শাহজাহানপুরের বাসা থেকে রাত তিনটার কিছুসময় পরে তুলে নেয় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।


এরআগে, গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা সকাল থেকে জড়ো হতে শুরু করে। দুপুরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে, বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এসময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করেন। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন।


পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মকবুল হোসেন নামে গুলিবিদ্ধ একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। 


বিকেল ৪টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সামনের সড়কে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। এসময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা এ্যানী ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায়। তবে সাংবাদিকরা ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে তাদের আটক করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


এরপর, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী-আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।


বুধবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে প্রবেশ করে তাদের বের করে নিয়ে আসে। পরে রিজভীসহ অন্যদের পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়।


ঘটনার পর তাৎক্ষণিক দলীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানের বিষয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপি অফিসে তাণ্ডব চালিয়েছে পুলিশ। এসময় তারা দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামানসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে গেছে।


আরএক্স/