ফটোগ্রাফি পেশার ধরণ কেমন?
সাইফুল বারী
প্রকাশ: ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, ২৭শে ডিসেম্বর ২০২২
তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, এনজিও, মিডিয়া থেকে শুরু করে বিয়ের আসর পর্যন্ত বিস্তৃত ফটোগ্রাফি পেশা। এমনকি আপনি চাইলে ফটো ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারেন।
ছোটবেলায় আমাদের কতকিছুরই না শখ থাকে! সময়ের সাথে সাথে আমরা বড় হতে থাকি এবং বাস্তবতার আকাশে আমাদের এই রঙিন শখগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যায়।
পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে অনেকেই জীবিকার টানে নিজেদের শখকে বিসর্জন দিয়ে গতানুগতিক পেশাগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু কেমন হতো, যদি আপনার ছোটবেলার শখকে পেশায় পরিণত করতে পারতেন? নিজের শখ পূরণের পাশাপাশি যদি দুই-চার পয়সা আয় হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। ছোটবেলায় শখের বশে ঘাস, পাখি, ফুলদের ছবি তোলা আপনিই কিন্তু চাইলেই হতে পারেন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার।
এখনকার তরুন প্রজন্মের কাছে ফটোগ্রাফি ব্যাপারটা তুমুল জনপ্রিয়। এর পেছনে কারণও রয়েছে অনেক। পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফিতে রয়েছে বৈচিত্র, তাই গতানুগতিক পেশার মতো এখানে একঘেয়েমি অনুভব করার সম্ভাবনা নেই। আর আপনি যদি সৃষ্টিশীল কাজ করে আনন্দ পান, তাহলে ফটোগ্রাফি আপনার জন্য উপযুক্ত পেশা। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনার মনে কৌতূহল জাগতে শুরু করেছে এবং একইসাথে কিছু প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে। তাহলে কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া যাক।
১) ফটোগ্রাফি পেশার ধরণ কেমন?
২) এর কাজের ক্ষেত্রটাই বা কতটুকু?
সবার আগে এ দুটো প্রশ্নই আপনার মাথায় আসার কথা। ফটোগ্রাফির বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। যেমন- ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, গ্লামার ফটোগ্রাফি, প্রোট্রেট ফটোগ্রাফি, প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি, ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি, ফটো ডকুমেন্টারি ইত্যাদি। এতগুলো ধরনের মধ্যে কোনদিকে এগোবেন সেটা নিজের পছন্দ ও পারদর্শীতার ভিত্তিতে ঠিক করে ফেলুন। তবে যেহেতু ফটোগ্রাফিকে আপনি পেশা হিসেবে নিচ্ছেন, তাই সব ধরনের ফটোগ্রাফির বেসিক সম্পর্কে হালকা ধারণা রাখলে ভালো হবে। ফলে যেকোনো সময় চাইলেই আপনি নিজের ফটোগ্রাফির ধরনে পরিবর্তন আনতে পারবেন।
আর কাজের ক্ষেত্র?
ফটোগ্রাফি পেশার চাহিদা কেমন সেটা নিয়ে ভাবছেন তো? আগেই বলে নিয়েছি, প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স আর গ্যাজেটের এই যুগে ফটোগ্রাফি পেশার বিস্তৃতি অনেক। মিডিয়ার প্রসারের ফলে যেমন বেড়েছে নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনের সংখ্যা, একইসাথে বেড়েছে ফটোগ্রাফারের চাহিদা।
ইদানীং বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতেও ওয়েডিং ফটোগ্রাফারের চাহিদা দেখার মতো। যেহেতু ফটোগ্রাফি পেশায় বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, তাই একজন ফটোগ্রাফারের মাসিক আয় নির্দিষ্ট নয়। তবে মোটামুটি বলা যায়, ফটোগ্রাফির একদম প্রাথমিক অবস্থায় আপনি হয়তো মাসে ১০-২০ হাজারের মতো টাকা আয় করতে পারবেন। তবে সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা বাড়লে এবং কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়লে উপার্জনও সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে।
এজন্য আপনি আমাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ফটোগ্রাফির পাঠ সম্পর্কিত সিরিজের আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন। এতে ফটোগ্রাফি সম্পর্কে আপনার ধারণা পরিষ্কার হবে।
ভালোমানের ফটোগ্রাফার হতে হলে ভালোমানের ক্যামেরার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের লেন্স, বিভিন্ন ফটোশপ সফটওয়্যার সাপোর্ট করে এমন কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ আপনার সংগ্রহে রাখুন। ফটো এডিটিংয়ের জন্য বিভিন্ন ফটোশপ সফটওয়্যার, গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যবহার আপনাকে শিখে নিতে হবে। বাসায় স্বল্প পরিসরে একটা স্টুডিও বানিয়ে নিলে নিরিবিলি পরিবেশে এডিটিংসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। সব কনফিউশন তো দূর হয়েই গেলো। তাহলে এখন আপনার ছোটবেলার শখকেই পেশা হিসেবে নিতে আর দেরি কেন? হ্যাপি ফটোগ্রাফিং!
রাব্বি হোসেন, মিরপুর ১১, নিউ মডেল ডিগ্রী কলেজ, অনার্স চতুর্থ বর্ষ।