প্রাচীন নিদর্শন খান জাহান আলী ঘোড়া দীঘি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, ১লা জানুয়ারী ২০২৩


প্রাচীন নিদর্শন খান জাহান আলী ঘোড়া দীঘি
ঘোড়া দীঘি

বিশ্ব ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্ত বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ। এই মসজিদকে ঘিরেই পুরো বাগেরহাট গড়ে উঠেছে একটি পর্যটন শহরে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় খানজাহান আলীর এই পুণ্যভূমিতে। 


এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে তৎকালীন সময়ে শত শত নিদর্শন থাকলেও মূলত ষাট গম্বুজ মসজিদ এলাকা এবং খানজাহান আলীর মাজারে জনসমাগম থাকে সব সময়। খানজাহান আলীর মাজার সংলগ্ন ঠাকুর দিঘী এবং ঘাট গম্বুজ মসজিদ সংলগ্ন ঘোড়া দীঘি দর্শিনার্থীদের প্রথম পছন্দের তালিকায়।


চারপাশে লবণাক্ত জল হলেও এই দিঘীগুলোতে অলৌকিকভাবে রয়েছে সুপেয় মিষ্টি পানি। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই দুটি দিঘী। দীঘি দুটিকে পবিত্র  হিসেবে ধরা হয়। শত শত বছর ধরে ঠাকুর দিঘিতে রয়েছে কুমিরের বসবাস। কিন্তু ঘোড়া দীঘিতে কুমির না থাকায় স্বাচ্ছন্দে অযু গোসল করতে পারেন দর্শনার্থীরা।


তাৎকালীন সময়ে খান জাহান আলী এই এলাকায় ৩৬০টি মসজিদের পাশাপাশি ৩৬০টি দিঘী খনন করেছিলেন, ধারণা করা হয়, এতগুলো দীঘির মধ্যে সে সময়ে খান জাহান আলী সর্ব প্রথম এই ঘোড়া দীঘি খনন করেছিলেন এবং এই অঞ্চলের প্রথম দিঘী এটা। 


বাগেরহাট জেলা সদরের ষাটগুম্বস ইউনিয়নের সুন্দরঘোনা গ্রামে খান জাহান আলী যে হাবেলী বা প্রশাসনিক কেন্দ্র গড়ে তোলেন তার নিকটে ষাটগুম্বজ মসজিদের পশ্চিম পাশে এই ঘোড়া দীঘির অবস্থান।


তৎকালীন সময়ে খান জাহান আলীর ঘোড়াদীঘি নাম করণ নিয়ে বেশ কয়েকটা প্রবাদ আছে যে একটি ঘোড়া এক দৌড়ে যত দূর গিয়েছিল, ততটা দীর্ঘ খনন করা হয় প্রকান্ড এ দীঘি। 


আবার দীঘি খননের পর খানজাহান (র:) ঘোড়ায় চড়ে দীঘির চারপাশে ভ্রমন করতেন সে কারণে “ঘোড়াদীঘি” নাম করণ করা হয়। আবার অনেকের মতে, দীঘিটি খননের পূর্বে এ স্থানে তার সেনাদের কুচকাওয়াজ ও ঘোড়দৌড় হতো। আর এ ঘোড়দৌড় থেকে “ঘোড়াদীঘি” নামকরণ হয়েছে। সুপেয় জলের এই দীঘিটি ১৯৮৬ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তির (সংরক্ষিত জলাশয়) তালিকাভুক্ত করা  হয়। 


বাগেরহাটে খান জাহান আলীর ঘোড়া দিঘীই বাংলাদেশের একমাত্র সংরক্ষিত জলাশয়।  আয়তকার দীঘিটি পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা। দীঘিটির আয়তন ২৫ একর ৩২ শতক। ১২ মাসই পানি থাকে এ দীঘিতে।