অতিরিক্ত শীতের কারণে বাগেরহাটে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া

বাগেরহাটে গত ছয় দিনের শৈত্যপ্রবাহে জন জীবনে এক প্রকার স্থবির হয়ে পরেছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না। সারা দিন সূর্যের দেখা নেই। শ্রমজীবী মানুষেরা হয়ে পরেছে কর্মহীন। অতিরিক্ত শীতের কারণে বাড়ছে শিশুদের নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগীর সংখ্যা। 

বাগেরহাট ২৫০ বেড শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় শৈত্য প্রবাহের শেষ ৫ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগ বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেডে সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় শিশুদের রেখে সেবা দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ শিশু ওয়ার্ডের বেডের সংখ্যা কম এবং সেখানে শিশু বাদে অন্যান্য রোগীদের রেখে সেবা দেওয়া হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার যাত্রপুর এলাকা থেকে আসা আলিফ হোসন(৪) এর মা ফাতেমা বেগম বলেন আমার বাচ্চার সর্দি, কাশি,জর নিয়ে সাত দিন আগে ভর্তি হয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার বাচ্চা সুস্থ হয়নি। ডাক্তার বলেছে আরও কিছুদিন থাকতে হবে। 

ঠান্ডা, কাশি জর নিয়ে আসা ইয়াসিন(১৫মাস) বয়সী এক শিশুর মা সুমি আক্তার বলেন, আমি আমার বাচ্চাকে গত বুধবার এই হাসপাতালে ভর্তি করাই। ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তার জানায় আমার বাচ্চার নিউমোনিয়া হয়েছে, বুকের ডান পাশে কফ জমেছে। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এমন হয়েছে বলে ডাক্তার বলেছে। এখনও আরও চার পাঁচ দিন থাকতে হবে বলে জানিয়েছে ডাক্তার। 

মাহিরা নামের এক শিশুর মা বলেন, আমার বাচ্চার ঠান্ডা লেগেছে। যার কারণে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়েছে। পরে ডাক্তার বলেছে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে নিউমোনিয়াও হয়েছে যার কারণে ওকে প্রতিদিন লেবুনাইজার দিতে হচ্ছে। ডাক্তার বলেছে এখানে আরও কিছুদিন থেকে চিকিৎসা নেওয়া লাগবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট ২৫০ বেড শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: জব্বার কোরেশী এই প্রতিবেদককে বলেন, গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহে ঠান্ডাজনীত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। আর এই রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশী। শিশু ওয়ার্ডের বেড সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় রেখে সেবা দিতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে যাদের সবারই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছে। আমরা আশা করছি দুই চার দিন পরে শৈত্য প্রবাহ কমলে রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে। 

বাগেরহাট ২৫০ বেড শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: অসিম কুমার সমদ্দার এই প্রতিবেদককে বলেন, গত কয়েকদিনের অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে অনেকে ভর্তি হয়েছেন। আমাদের শিশু ওয়ার্ডের ধারন ক্ষমতার তিন গুন বেশী রোগী ভর্তি হয়েছে। শীতজনিত রোগীর সংখ্যা চিন্তা করে আমরা খুব তাড়াতাড়ি শিশু ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা বাড়ানো হবে। 

তিনি আরও বলেন আমাদের জনবল সংকট রয়েছে তবে যে জনবল আছে তা দিয়ে আমরা সর্বোত্তম সেবা প্রদান করে যাবো, যেন সাধারণ রোগীদের কোন সমস্যা না হয়।