উপার্জনের একমাত্র ভ্যানটি নিয়ে গেলো চোর, কান্না থামছেনা কাজলের


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, ২০শে জানুয়ারী ২০২৩


উপার্জনের একমাত্র ভ্যানটি নিয়ে গেলো চোর, কান্না থামছেনা কাজলের
ভ্যান চালক কাজল

চুয়াডাঙ্গা শহরের জ্বিনতলা মল্লিক পাড়া থেকে কাজল (১৬) নামে এক কিশোরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চুরির ঘটনা ঘটেছে। আয়ের একমাত্র সম্বল হারিয়ে দিশেহারা কাজল।


বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারী) দুপুরে যাত্রীদের অনুরোধে ভ্যান থামিয়ে ডিম আনতে গেলে, কৌশলে কাজলের ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় যাত্রীবেশী চোরেরা। অনেক খোজাখুজি করে ভ্যান না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে কিশোর কাজল, তার চারপাশে জড় হয় স্থানীয়রা। তাদের আশ্বাসে কান্না থামছে না কাজলের।


কাজল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের কিরণগাছি গ্রামের লাল্টুর ছেলে।


কিশোর কাজলদ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে সদরের সরোজগঞ্জ বাজার থেকে এক বৃদ্ধসহ দুজন আমার ভ্যানে চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড়ে আসেন। সেখান থেকে জ্বিলতলা মল্লিকপাড়ায় নিয়ে যেতে বলেন। দুজনের মধ্যে একজন টাকা দিয়ে বলেন দোকান থেকে ডিম কিনে আনতে। ডিম নিয়ে এসে দেখি ভ্যান নেই। অনেক খুজেও ভ্যান পাইনি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সে। 


কাজল আরও বলেন, তিন ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার বড়। আমার বাবা ভাঙরির ব্যবসা করেন। সেটা দিয়ে সংসার চলেনা। বাড়ি থেকে ভ্যান কিনে দিয়েছে। এই ভ্যান চালিয়েই সংসারের হাল ধরেছি আমি। এখন ভয়ে বাড়ীতেও যেতে পারছিনা। বাবা-মা আমাকে বকাঝকা করবেন। কি করব কিছুই জানিনা। 


স্থানীয় যুবক আরাফাত বলেন, আমাদের এলাকা থেকে কাজলের ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে। এই অল্প বয়সে যেহেতু সে ভ্যান চালাচ্ছে তাহলে তার পরিবার খুবই অসহায়। ভ্যান চুরির পর তার কান্না দেখে মোটরসাইকেল করে বিভিন্নস্থানে খুজেও পাইনি। পরে সদর থানায় নিয়ে একটি অভিযোগ করেছি। 


এদিকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করেছে। 


কাজলের মা ঝর্ণা খাতুনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিবেদকের। ভ্যান চুরির কথা শুনেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। 


তিনি বলেন, কাজলের বাবা ভাঙরির ব্যাবসা করে সংসার চালাতে হিমশিম খাই। তাই বাড়িতে থাকা গরু বিক্রি করেই কাজলের ভ্যান কিনে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন উপার্জনের টাকা সংসারে দিচ্ছিল সে। এখন কিভাবে সংসার চলবে বলে আবারো কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে শোনা যায়।

 

তিনি আরও বলেন, ছেলেটা আমার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এই এভাবের সংসার এক পড়াশোনা করাতে পারেনি তাকে। বাধ্য হয়েই ভ্যান কিনে দিয়েছিলাম।


চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহব্বুর রহমান বলেন, পুলিশ তৎপর রয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।