কক্সবাজারের চকরিয়া দুই ভালুক শাবক উদ্ধার
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, ২২শে জানুয়ারী ২০২৩
কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে বিপন্ন প্রজাতির ২ টি ভালুক শাবক উদ্ধারসহ পাচারচক্রের এক সদস্য গ্রেফতার করেছে জেলা ডিবি পুলিশের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারী) রাত ৯ টায় চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকা হতে দুটি বিপন্ন প্রজাতির ভালুক শাবক উদ্ধারসহ আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচারচক্রের এক সক্রিয় সদস্য দীপক দাস (৩২) কে গ্রেফতার জেলা ডিবির বিশেষ টিম।
গ্রেফতার দীপক দাস (৩২) চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকার মৃত সোনারাম দাসের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আমদানী নিষিদ্ধ বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী পাচারের সঙ্গে জড়িত।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, পিপিএম বার , এক সংবাদ সম্মেলনে জানান তার নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকষ টিম সুনির্দিষ্ট প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে জানা যায় ১৯ জানুয়ারী রাত ৯ টায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী গ্রামে দীপক দাসের বাড়ীতে অভিযান শুরু করে।
দীর্ঘ অভিযানের পর বিপন্ন প্রজাতির দুটি ভালুক শাবক উদ্ধার করা হয় ও আমদানি নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে দীপক দাসকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত দীপক দাসকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায় দীপক দাস একজন আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে দীর্ঘদিন যাবৎ বন্যপ্রাণী পাচারের সাথে জড়িত।
সে বান্দরবান জেলার সীমান্তবর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আমদানী নিষিদ্ধ বিপন্ন বন্যপ্রাণী চোরাইপথে অবৈধভাবে বাংলাদেশে নিয়ে এসে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রাখে। কিছু দিন হেফাজতে রাখার পর পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। তারা সাতক্ষীরা ও যশোরের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে আমদানী বা রপ্তানী নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী গুলো পাচার করে দেয়।
একইভাবে আকটকৃত দীপক দাসের হেফাজত হতে উদ্ধার ও জব্দকৃত ভালুক শাবক দুটি বান্দরবান জেলার সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রায় ১৪ দিন পূর্বে চোরাইপথে পাচার করে নিয়ে এসে হেফাজতে রাখে। কয়েক দিন পর অধিক মুনাফা নিয়ে সে আরন্তর্জাতিক পাচার চক্রের অন্য সদস্যদের নিকট ভালুক শাবক দুটি বিক্রির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। গ্রেফতারকৃত দীপক দাসকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় এই পাচারকারী চক্র সম্প্রতি আরো দুটি ভালুক, দুটি উলুক ও ছয়টি লজ্জাবতী বানর পাচার করেছিল।
উল্লেখ, আইইউসিএন প্রধানত বনায়ন ধ্বংস ও বন্যপশু শিকারের কারণে ভালুকদের সংকটাপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশে কালো ভালুক মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত এবং বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর তফসিল-১ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। গ্রেফতাকৃত আসামী দীপক দাসের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় মামলা রুজু হয়েছে এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আরএক্স/