কেশবপুরে বোরোর শুরুতেই লোডশেডিং, ভোগান্তিতে কৃষক
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, ২৪শে জানুয়ারী ২০২৩
যশোরের কেশবপুরে গত ১০ দিন ধরে চলছে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে, আমানের ফলন বিপর্যয়কে মাথায় নিয়ে উপজেলা ব্যাপী চলছে বোরো ধানের জমি প্রস্তুত ও ধান রোপণ উৎসব। এতে বোরো চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, গত আমন মৌসুমে ডিলাররা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কাছে চড়া মূল্যে রাসায়নিক সার বিক্রি করে। সরকার সেচে ভর্তুকি দিলেও বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প মালিকরা যোগসাজসে পানির দাম বাড়িয়ে দেয়। এরপরও তীব্র খরায় আমানের ফলনের বিপর্যয় হয়। আমনের এ লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে আগামীতে ধানের বাজার মূল্য বেশি পাওয়ার আশায় কৃষকরা চলতি বোরো মৌসুমে আবারও জমি প্রস্তুত ও ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে ওঠে।
উপজেলার প্রতিটি মাঠে একদিকে যেমন চলছে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে জমি চাষ। অন্যদিকে চলছে গরু দিয়ে মই দেয়ার কাজ। কেউ কেউ ব্যস্ত ধান রোপণ কাজে। যাদের জমি আগেভাগেই প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে তারা ধান রোপণের জন্যে কৃষি শ্রমিকের বাড়ি বাড়ি ধরনা দিচ্ছেন। এর বিপরীত চিত্র উপজেলার পূর্বাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে। তারা বোরো আবাদের লক্ষ্যে স্যালো মেশিন দিয়ে বিলের পানি নিষ্কাশনে দিন-রাত শ্রম দিচ্ছেন। তবে বোরো আবাদের পাশাপাশি সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচী চলমান থাকায় সময়মত ৫‘শ টাকায়ও মিলছে না কৃষি শ্রমিক।
মজিদপুর গ্রামের সেচ পাম্প মালিক আব্দুল লতিফ জানান, এবছর রাসায়নিক সারের কোন ঘাটতি নেই। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই সার পাওয়া যাচ্ছে। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া আসায় জমিতে ঠিকমত পানি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ এলেই সেচ পাম্প চালু করা হচ্ছে। কিন্তু পানি জমিতে পৌঁছানোর আগেই আবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে এখন বিদ্যুতের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো।
এ ব্যাপারে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কেশবপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, এ উপজেলায় গভীর-অগভীর নলকুপ মিলে প্রায় এক হাজার বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প রয়েছে। যার অধীনে প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ হয়ে থাকে। বৈশ্বিক মহামারির কারণে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। যে কারণে আমরা সরবরাহ কম পাচ্ছি। অচিরেই এ সংকট কেটে যাবে। তবে বোরোর জন্যে রাত ১১ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋুতুরাজ সরকার বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫‘শ ২০ হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে গত ২০ জানুয়ারী পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমি। উপজেলা ব্যাপী বোরো আবাদ পুরোদমে চলছে। তবে পূর্ব এলাকার বিলগুলির পানি নিষ্কাশন সম্ভব হলে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষি উপকরণ থেকে শুরু করে সার, বীজ সবই কৃষকের হাতের নাগালে ছিল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার ভালো ফলন হবে।
জেবি/এসবি