জলঢাকায় ব্রীজের অভাবে তিস্তা পাড়ের মানুষেরা সুবিধা বঞ্চিত


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, ২৬শে জানুয়ারী ২০২৩


জলঢাকায় ব্রীজের অভাবে তিস্তা পাড়ের মানুষেরা সুবিধা বঞ্চিত
ঝুঁকি নিয়ে কাঠের ব্রিজ দিয়ে পারাপার

নীলফামারী জলঢাকায় স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রীজের অভাবে তিস্তা পাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি একটুও।


ফলে শিক্ষা,স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, চিকিৎসা সহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় তিস্তার চরঞ্চলের মানুষদের। উপজেলার  তিস্তা নদীর তীরবর্তী তিস্তা ও বুড়িতিস্তার নদীবাহিত ৪টি ইউনিয়ন গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারীর তিস্তার চরে বসবাসকারী পরিবারগুলো যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নদীপথে বর্ষাকালের বাহন নৌকা আর শুস্ক মৌসুমে কাঠ বলা বাশেঁর সাকো। চর এলাকায় কোনও পাকারাস্তা ও স্বাস্থ্য  কেন্দ্র  না থাকায় অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় ।


এখন  এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত পানি শুন্য তিস্তা  নদীর বুকে  জেগে ওঠেছে শুধু  ধু ধু রুপালী  বালুচর।আর বর্ষার সময়ে বন্যায় নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ভূমিহীন কৃষকেরা বর্তমান পানি শুন্য তিস্তায় বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে  বিপ্লব ঘটিয়েছেন।এক সময় তিস্তা নদীতে ছিল তাদের সুখ আর বর্তমানে দুঃখের কারণ, এখন সেই নদীর বালু চরের পলিযুক্ত বেলে দো-আঁশ মাটিতে এসব নিঃস্ব খেটে খাওয়া মানুষ নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন  ফসল বুনেছেন।ভাবনচুর চরের আনিছুর রহমান জানান, ৪/৫ বছর আগে নদী ভাঙ্গনে জমি জায়গা হারিয়ে বাধে আশ্রয় নিয়েছিলাম। 


সংসারে খুব অভাব-অনটন ছিল, কাজকর্মও ছিলনা।বাধ্য হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে জেগে ওঠা চরে ভুট্টা, আলু ও সবজি চাষ করে এখন আল্লাহর রহমতে ভাল আছি। বাড়ির আঙিনায় মাথা উঁচু করলেই এখন তিনি দেখতে পান স্বপ্নের ফসল সবুজের সমারোহ ক্ষেত।ডাউয়াবাড়ীর বড়বাধ এলাকার কাশেম বলেন তিস্তার বালুচরে ফসল ফলানো যাবে এটি স্বপ্নেও ভাবেনি। এখন বালুচরে ফসল আবাদ করে আমার অভাবের সংসারে সচ্চলতা এসেছে এদিকে প্রতি বছরই বাড়ছে চরের পরিধি। 


সেই সাথে বাড়ছে ফসলের ফলন। লাভের টাকা হাতে পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার কৃষকেরা।তবে চর এলাকায় স্বাধীনতার ৫০ বছরেও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বসবাসরত চরাঞ্চলের এই মানুষগুলোর স্বাস্থ্যসেবার জন্য নেই কোনো মানসম্মত কমিনিউটি ক্লিনিক,ছেলেমেয়েরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য চিকিৎসা সহ বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য নেই কোনও মানসম্মত হাই স্কুল- মাদ্রাসা, কলেজ।


অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় স্বজনদের কাধে করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সহজ হাসপাতালে যেতে হয়।চরবাসীর দাবি, বর্তমান সরকার আমলে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আমাদের এ চর এলাকায় রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন উন্নয়নের দিক থেকে আমরা বঞ্চিত রয়েছি। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো  না থাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে ও উপজেলা সদর যাতায়াতে খুবকষ্ট হয়।তাছাড়া বন্যায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। 


এ সময় কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে অনেক রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যায়।বুড়িতিস্তা নদীর মন্থনা ঘাটের ওপর সেতু নির্মাণ এবং রাস্তাঘাট হলে তারা এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতেন।তিস্তা পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ঘাট গুলোতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন চরবাসি।


তিস্তায় বয়ে যাওয়া চারটি  ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ  বলেন, ওই এলাকা সমুহে উন্নয়ন করার জন্য  এবং কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন জানিয়েছি।