গলাচিপায় পতিত জমিতে আগাম তরমুজ চাষে সফলতা কৃষকের


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, ২৬শে জানুয়ারী ২০২৩


গলাচিপায় পতিত জমিতে আগাম তরমুজ চাষে সফলতা কৃষকের
তরমুজ

অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন উপকূলিয় অঞ্চলের কৃষকরা। গত বছর তরমুজে ব্যাপক লাভ হওয়ায় এবার সেই ঝোঁক আরও বেড়েছে। এবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার পরে পতিত জমিতেও প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে নেমেছেন অনেকে। এই চিত্র পটুয়াখালী জেলার মাঠে মাঠে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, কলাপাড়া, মিঞ্জাগঞ্জ, দুমকি, মহিপুর, কুয়াকাটাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার জমিতে চাষ হচ্ছে তরমুজের।


আগাম ফলন পেতে হলে জানুয়ারি মাসে বীজ বুনে শীতের হাত থেকে কচি চারা রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হয়। কিন্তু এই অঞ্চলের কিছু কৃষক নভেম্বরে বীজ বপন করেন। নভেম্বরে যে সকল জমিতে তরমুজ চাষ করেন তা মূলত পতিত বালুর ঢিবি ও বালুরচর। এ জমিতে অন্য কোনো ফসলের চাষ করেন না তারা। তরমুজ চাষের উপযুক্ত মৌসুম ফেব্রুয়ারি মাসে মূলত ফসলি জমিতে চাষ করা হয়। আগাম তরমুজ চাষে কঠোর পরিশ্রম হলেও ফলন ভালো, বাজারে চাহিদা ভালো। বেশি লাভজনক হওয়ায় উপকূলীয় এলাকায় দিনদিন বাড়ছে রসালো মৌসুমি ফল তরমুজের চাষের।


আমন ধানের বীজ বোনা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তুলতে ৫ মাস সময় লাগে। প্রতি বিঘা আমন উৎপাদনে ৯-১১ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমির ধান বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকায়। সে ক্ষেত্রে প্রতি বিঘায় আমন আবাদে লাভ হয় সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে তরমুজে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত সময় লাগে সর্বোচ্চ তিন মাস। প্রতি বিঘায় খরচ হয় ১২-১৪ হাজার টাকা। এতে তরমুজ বিক্রি হয় ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়। যদিও এবার খরচ কিছুটা বাড়বে। আগাম তরমুজের দাম সবসময় বেশি বিক্রি করেন কৃষক।


চলতি মৌসুমেও আগাম চাষে মিলেছে বাম্পার ফলন। মিষ্টি পানির সংরক্ষণ বাড়ানো গেলে এক মৌসুমে এ খাত থেকেই আয় হতে পারে হাজার কোটি টাকা। 


স্থানীয় কৃষক সবুজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা এক ইঞ্চি পতিত জমি খালি রাখা যাবেন যখন টিভিতে শুনেছি তখন থেকেই আমরা পতিত জমিতে আগাম তরমুজের চাষাবাদ শুরু করেছি। তরমুজের পাশাপাশি কলাসহ অরো অনেক প্রকার কৃষি চাষ করি। 


গত বছর তরমুজ লাগানোর জন্য এক বিঘা জমির ইজারামূল্য ছিল তিন থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার টাকা। এবার ব্যাপক চাহিদার কারণে ইজারামূল্য প্রতি বিঘা ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। ডিজেলের দাম বেশি থাকায় চাষের খরচ বেড়েছে, সারের সংকট আছে আর বীজের দামও বেড়েছে। আবহাওয়া নিয়েও শঙ্কিত তারা।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ, অধিদপ্তর খামার বাড়ি, পটুয়াখালী কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের মোট উৎপাদিত তরমুজের অর্ধেকের বেশি চাষ হয় পটুয়াখালীতে। আগে থেকে চাষ হওয়া এলাকার সঙ্গে এবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার পরে কয়েকটি উপজেলায় পতিত জমিতে নতুন করে এই তরমুজের আবাদ হচ্ছে। গত বছর এ জেলায় ৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। এ বছর ৪ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে।


জেবি/এসবি