মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশার মামলা নিতে গড়িমসি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জানুয়ারী ২০২৩


মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশার মামলা নিতে গড়িমসি
মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা

নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের সদস্য জুনায়েদ সিদ্দিকী (বিবেক) কর্তৃক হামলার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশার মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে ত্রিশাল থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। 


গত ২৪ জানুয়ারী উপজেলার কানহর উকিল বাড়ি মোড়ে পুর্ববিরোধে অতর্কিত হামলায় বাম চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইনী সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। 


স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাদি ও সাক্ষী হওয়ার কারণে ময়মনসিংহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশাকে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে আসছিলেন রাজাকার জুবায়ের সিদ্দিকীর ছেলে জুনায়েদ সিদ্দিকী ওরফে বিবেক। 


এবিষয়ে কর্ণপাত না করায় গত ২৪ জানুয়ারী কানহর নিজ বাড়ি থেকে ময়মনসিংহ আসার উদ্দেশ্যে বের হলে উকিল বাড়ি মোড়ে কামাল পাশার ওপর অতর্কিত হামলা করে জুনায়েদ সিদ্দিকী ও তার ভাই শৈবাল। হামলায় মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশার বাম চোখ ক্ষতবিক্ষত হয়। 


এছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হামলাকারী জুনায়েদ সিদ্দিকী নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের প্রধান আবদুর রউফের প্রধান সহযোগি। ২০০৭ সালে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের প্রধান আবদুর রউফের সহযোগি হিসেবে নানা অপরাধ কর্মকান্ডের জন্য র‌্যাব-৯ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। এছাড়াও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। 


বৈলর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মঞ্জুরুল হক মিলন বলেন, কামাল পাশা একজন জনপ্রিয় বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে এলাকাসহ পুরো জেলায়। ঘটনারদিন আমি থাকে একটি চা খেতে দাঁড় করাই। এরমধ্যে হঠাৎ করে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আমরা এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। 


হামলার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা বলেন, ১৯৭১ সালের শুরু থেকেই আমার অবস্থান স্বাধীনতা বিরোধীদের বিপক্ষে ছিল। আজও তা বলবৎ রয়েছে। যারা দেশের শত্রু স্বাধীনতা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে মামলা, সাক্ষীর জন্য আজ আমার এ পরিণতি। আমি প্রাণ সংশয়ের ভয়ে আছি। পুলিশেরও তেমন সহযোগিতা পাচ্ছি না। মামলা করতে চাইলেও তারা নেয়নি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের ওপর আঘাত তা কাউকে বলতেও পারছি না। 


ময়মনসিংহ মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা সেলিম সরকার রবার্ট বলেন, ত্রিশালে বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন রয়েছে। তাদের প্রধান টার্গেট মুক্তিযোদ্ধারা। কামাল পাশা একজন মুক্তিযোদ্ধের নিবেদিত প্রাণ। বিভিন্ন সময় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় বাদি এবং সাক্ষীর কারণে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। আমরা দ্রুত হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। 


ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা আহত হয়ে থানায় আসলে আমরা তাকে আইনী সহযোগিতা করি। তিনি মামলা করতে রাজি না হওয়ায় আমরা একটি অভিযোগ নেই। অভিযোগটি তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়। রোববার নির্দেশনা আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 


আরএক্স/