আখ মাড়াইয়ের ৮৪ বছরের সর্বনিম্ন রেকর্ড, ক্ষতি ৫০ কাটি টাকা

আখের অভাবে কেরুজ চিনিকল বন্ধ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৩


আখের অভাবে কেরুজ চিনিকল বন্ধ
দর্শনার কেরু অ্যান্ড কােম্পানি

দেশের সর্ববৃহত সুপার মিল কমপ্লেক্স দর্শনার কেরু অ্যান্ড কােম্পানি ২০২২-২৩ মৌসুমের আখ মাড়াই মাত্র ৫৩ দিনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শুক্রবার আখের অভাবে ৪২ দিনই বন্ধ হয়েছে চিনিকারখানার কার্যক্রম। ফলে মাড়াই মৌসুম শেষ হওয়ায় এবার কােম্পানীর চিনিকল বিভাগে প্রায় ৫০ কােটি টাকা লােকসান গুণতে হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। 


শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভােরে আখেরি হুইসেল বাজিয়ে সমাপ্ত করা হয় মাড়াই কার্যক্রম। কেরু চিনিকলের ৮৪ বছরের ইতিহাসে এটাই সর্বনিম্ন আখ মাড়াইয়ের রেকর্ড বলে জানাগেছে।


উল্লখ্য , চলতি মাড়াই মৌসুমে ২০২২-২০২৩ সালে ৫৩ দিনে ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৮৮৪ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছিল। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছিল ৭ শতাংশ। চলতি রােপন মৌসুমে ৪ হাজার ২৩০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এর মধ্য মিলের নিজস্ব কৃষি খামারগুলাের ১ হাজার ৫০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে।


তবে ২০২২-২০২৩ চলতি মাড়াই মৌসুমে ৫৩ দিনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মাত্র ৪২ দিনেই কেরু চিনিকলের মাড়াই মৌসুম শেষ হলাে। এ ৪২ দিনে মাত্র ৪৬ হাজার ৬০ মট্রিক টন আখ মাড়াই করা হয়েছে। এতে ২ হাজার ২১৯ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হবে বলে জানায় চিনিকল কর্তপক্ষ। যার চিনি আহরণের হার মাত্র ৫ দশমিক শূন্য ৫। 


কর্তপক্ষের অবহেলায় এবার আখের সাথে পাতা ও ময়লাযুক্ত শিকড় মাড়াইয়ের মহোৎসব চলে। চিনিকারখানায়। মাড়াইয়ের পরিমান বেশী দেখাবার প্রতিযাগীতায় আখ এতটাই অপরিস্কার ছিল ট্রলিতে আখ আসে না আখের (শুকনা পাতা) আসে তা সহজেই বুঝা যেতনা। প্রবীণ কর্মচারীরদের অভিমত- তারা কখনাে এত অপরিস্কার আখ মাড়াই হতে দেখেননি চিনিকারখানায়, যার প্রভাব চিনি আহরণের হার তলানীত পড়ে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় বড় অংকের লােকসান হবে প্রতিষ্ঠানটিতে। গত ২০২১-২২ মৌসুমে চিনি কারখানায় ৭০ কাটি টাকা লোকসান গুণতে হয়েছিল।


তবে এ বছরেও চিনি কারখানায় প্রতিষ্ঠানটির ৫০-৫৫ কাটি টাকা লােকসান হবে বলে জানান কেরুর মহা-ব্যবস্থাপক (অর্থ) মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম।দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, ‘আগামী মৌসুমে চিনি কারখানাকে লাভজনক অবস্থায় নেয়া সম্ভব নাহলেও বড়ধরণের লোকসান কমাতে প্রয়োজনীয় সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আখচাষে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে কৃষকদের। আখচাষীদের সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন তবে গতবারের তুলনায় এবার আখের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। মিল গেটে ১৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮০ টাকা। এছাড়া আখক্রয় কেন্দ্রগুলোতে ১৩৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৬ টাকা।


আরএক্স/