চুয়াডাঙ্গায় খাদ্যগুদামের গমের সঙ্গে এলো ২৮ বস্তা বালি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


চুয়াডাঙ্গায় খাদ্যগুদামের গমের সঙ্গে এলো ২৮ বস্তা বালি
চুয়াডাঙ্গায় খাদ্যগুদামের গমের সঙ্গে এলো ২৮ বস্তা বালি

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাদ্যগুদামে আসা গমের চালানের ভেতর পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা বালু ইট-সিমেন্টের জমানো পাথর। 


রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আসা ছয় ট্রাক গমের ভেতর এসব বালু, সিমেন্ট- বালুর জমানো চাঙড় ও ইট পাথর পাওয়া যায়।


এ ঘটনায় ওই ছয়টি ট্রাকসহ ট্রাকের চালক ও সহকারিকে হেফাজতে নিয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। 


কিভাবে গমের বস্তার ভেতরে বালুর বস্তা এলো এ নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। যারাই এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ।


চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী খুলনার সরকার এন্টারপ্রাইজ, জোনাকি এন্টারপ্রাইজ ও সানরাইজ এন্টারপ্রাইজের পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গোডাউনে মোট ৩০০ টন গম পাঠানোর কথা ছিল। সেই অনুযায়ী গত শুক্রবার গমের প্রথম চালান ১০০ মেট্রিক টন আসে। রোববার ভোরে দ্বিতীয় চালানের ১০০ মেট্রিক টন গম আসলে আনলোডের সময় একটি ট্রাকে বালুভর্তি ৭ টি বস্তা পাওয়া যায়। এরপর থেকেই তোলপাড় শুরু হয় জেলার খাদ্য বিভাগে। দুপুরে ট্রাকগুলো আনলোড করার সময় পাওয়া যায় একে একে বালু বোঝাই ২৮টি বস্তা। এছাড়া সিমেন্ট খোয়ার মিশ্রিত বড় বড় পাথর পাওয়া যায়।


এদিকে এঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ.কে.এম শহিদুল হক। কমিটিতে আছেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল হামিদ, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও জেলা কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক সানজিদা বানু। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদামের শ্রমিক মুক্তার আলী বলেন, ‘আমরা প্রথমে একটি ট্রাকে কয়েকটি বালুর বস্তা পাই। এরপরই আমাদের সন্দেহ হয়। এ সময় সব ট্রাকেই কমবেশি বালুর বস্তা উদ্ধার হতে থাকে। শেষমেশ ২৮ বস্তা বালু পাই আমরা।’ এর আগে এমন কখনো হয়নি।


চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সকালে ট্রাক থেকে গম নামানোর সময় বালির বস্তা দেখতে পান শ্রমিকেরা। এরপর সন্দেহ হলে সব ট্রাক থেকে মোট ২৮ বস্তা বালি ও ঢালাইয়ের সিমেন্টের কয়েকটি বড় পাথর পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে ট্রাক চালক ও হেলপাররা গমগুলো বিক্রি করে বালু নিয়ে এসেছে। ছয়টি ট্রাক এবং ট্রাকের চালক ও হেলাপারকে নিজেদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, বিকেল পর্যন্ত একটি গাড়ির গমের ওজন করা হয়েছে। বাকি গাড়ীর গম ওজন করলে বোঝা যাবে কতটুকু বিক্রি করেছে, নাকি বালুর বস্তা আগে থেকেই ছিল।


চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ.কে.এম শহিদুল হক বলেন, আজ তিন প্রতিষ্ঠানের দুটি করে মোট ৬ ট্রাকে ১০০ মেট্রিক গম এসেছে। এরমধ্যে ২৮ বস্তা বালি ও সিমেন্ট- বালুর জমানো চাঙড় ও ইট পাওয়া গেছে। ঘটনার পর আমি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে চুক্তি আছে সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে বিষয়টি জটিল মনে হলে তাদেরকে সাসপেন্ড করতে পারেন। এখানে গমের ঘাটতি হলে ঘাটতির দ্বিগুন জরিমানা করতে পারেন। পরিহবনকারি ঠিকাদারদের যোগাযোগের কোন নাম্বার না থাকায় ট্রাক চালকদের তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।