স্কুল শিক্ষক হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৪ আসামি গ্রেফতার
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সিপিসি-৩ মাদারিপুর ক্যাম্পের যৌথ অভিযানে কুষ্টিয়ার স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত ৪ জন পলাতক আসামি গ্রেফতার হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) রাত ৩ টার সময় ঢাকা, মাদারিপুর এবং কুষ্টিয়া থেকে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৪ টার সময় কুষ্টিয়া র্যাব ক্যাম্পের মিডিয়া কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন কুষ্টিয়া ইবি থানার রনজিতপুর এলাকার মোকাদ্দেস আলীর ছেলে মোঃ দেলবার (৭০), তার আপন সহদর মোঃ ফিরোজ (৬৫),ফিরোজের ছেলে মোঃ সবুজ (৩০),ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার সিরামপুর এলাকার রফিউদ্দিনের ছেলে মোঃ হেলাল (৩৫)।
র্যাব সুত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার রনজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক রবিউল ইসলামকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানা যায়। হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে নিহতের শশুর বাদী হয়ে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যার মামলা নং-১০, তারিখ-৩০/১২/২০০৫, ধারা ৩০২/১০৯, পেনাল কোড-১৮৬০, জিআর নং-৯৮/০৫। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ৩১ আগষ্ট আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক ৭ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২৫,০০০/-টাকা জরিমানা করে রায় প্রদান করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামিগণ আত্মগোপনে চলে যায়। সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামি রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে র্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ হেডকোয়ার্টারের অধিনায়ক মোঃ মারুফ হোসেন পিপিএম এর দিকনির্দেশনায় এবং র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর সহযোগিতায় র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্প গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি ফিরোজ এবং সবুজ হত্যাকান্ডের পর ঘর-বাড়ি এবং সম্পত্তি বিক্রি করে মাদারিপুর চলে যায়। সেখানে তারা নিজেদের নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে নতুন এনআইডি তৈরি করে বসবাস করছিল। দেলবারও নিজের জমি-জমা বিক্রি করে কুষ্টিয়ার পোড়াদহে বাড়ি তৈরি করে মধু চাষী হিসেবে জীবন যাপন করছিল। অপর আসামি হেলাল ঢাকার উত্তরায় টাইলস মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতো। মামলার বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।
আরএক্স/