চুয়াডাঙ্গায় নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৪৯ অপরাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৩


চুয়াডাঙ্গায় নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ
অফিস,বাড়ি ভাংচুর

চুয়াডাঙ্গায় নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ধাওয়া-লাটা ধাওয়া, অফিস,বাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাংচুর, স্কুলছাত্রীসহ আহত ১১


চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী (স্বতন্ত্র) ও নৌকা প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।  


এসময় আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর (স্বতন্ত্র) নির্বাচনী অফিস, কর্মীদের চারটি মোটরসাইকেল ও এক কর্মীর বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এতে বিদ্রোহী’ প্রার্থীর (স্বতন্ত্র) স্কুলছাত্রীসহ তিনজন এবং নৌকা প্রার্থীর আটজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 


এরমধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। 


শনিবার (১১ মার্চ) রাত ৮ টার থেকে ১০ টা পর্যন্ত ইউনিয়নের জহুরুলনগর, বলিয়ারপুর নাগদহ গ্রামে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে।


এদিকে এঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।  


ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারিতে নৌকা প্রতীকের আহত ৮ কর্মীরা হলেন- বাবলুর রহমান (৫০), কেসমত আলী (৪০), আকরামুল হোসেন (৩৫), খবির উদ্দিন (৫৫), আনিছুর রহমান (৪৫), দবির আলী (৪০), মিয়া জান (৩৫) ও আব্দুস সেলিম (৪৬)। এরমধ্যে খবির উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন।


অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত কর্মীরা হলেন, ইসরাইল হোসেন বুদো (৪০), তার ছেলে মামুনুর রশিদ (২৪), ও মেয়ে নবম শ্রেনির ছাত্রী আয়েশা খাতুন (২৫)। এরমধ্যে ইসরাইস হোসেন বুদো স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী হওয়ায় তার বাড়িতে ভাংচুর চালায় নৌকা প্রার্থীর কর্মীরা। এসময় দুই ছেলে-মেয়েকে বেধড়ক পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠে।

 

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াত জনবাণীকে বলেন, জহুরুলনগর গ্রামে আমার কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী উপস্থিত থেকে তার কর্মীরা হত্যার উদ্দেশ্য আমার কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে আমার কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। ওছাড়া আমার কোন নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেনি। তারা নিজেরা নিজেদের অফিস ভাংচুর করে আমার কর্মীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। এঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করব বলে জানান তিনি।


আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) চশমা প্রতীকের এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল জনবাণীকে বলেন, রাতে জহুরুলনগর আমার নির্বাচনী অফিসে কাছাকাছি ছিলাম। এসময় নৌকা প্রার্থীর ২০/৩০ জন কর্মী মোটরসাইকেলযোগে এসে আমার নির্বাচনী অফিস ও চারটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। বলিয়ারপুর গ্রামে এক কর্মীর বাড়ি ভাংচুর করে এবং তার দুই ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে জখম করে তারা। এছাড়াও তারা নিজেরায় নৌকার অফিস ভাংচুর করে আমাদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের জনবাণীকে বলেন, ১১ জনের সবার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে দবির আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ধারনা করছি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।


আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জনবাণীকে বলেন, চশমা ও নৌকা প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটেছে৷ চশমার অফিস ও তার কর্মীদেরও কয়েকটা মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে। এতে উভয়পক্ষের মোট ৪ জন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। এখনো কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


আরএক্স/