এতিমখানা পরিচালকের বিরুদ্ধে এতিমের টাকা হরিলুটের অভিযোগ


Janobani

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, ১৭ই মার্চ ২০২৩


এতিমখানা পরিচালকের বিরুদ্ধে এতিমের টাকা হরিলুটের অভিযোগ
এতিমখানা পরিচালক

ভোলা সদর থানাসহ ৭টি উপজেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রায় ১০০টিরও বেশি বেসরকারি এতিমখানা রয়েছে। এসব বেসরকারি অধিকাংশ এতিমখানায় ভুয়া এতিম শিশু দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে এতিমখানা পরিচালকদের বিরুদ্ধে। 


অধিকাংশ ছাত্রদের মা-বাবা থাকলেও অনেক মাদ্রাসা ছাত্রদের এতিম পরিচয়ে এতিমখানায় তাদের ভর্তি দেখিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলা কমর্কর্তাদের যোগসাজশে এদের নামে সরকারি অর্থ বরাদ্ধ বাস্তবায়ন করছেন। 


অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি এতিমখানার বরাদ্দ বন্ধ ও কমিয়ে দিয়েছেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। 


ভোলা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, তাদের তালিকা অনুযায়ী ভোলা জেলার ৭টি উপজেলায় প্রায় ২৫টিরও বেশি বেসরকারি এতিমখানা রয়েছে। ২৫টি এতিমখানার অসহায় দুস্থ্য এতিম শিশুর জন্য দেওয়া হয় প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা। এসব এতিমখানায় বছরে সরকারি বরাদ্দ রয়েছে কোটি টাকার উপরে। এতিমখানার অধিকাংশই মাদ্রাসাভিত্তিক লিল্লাহ বোর্ডিং। 


দৈনিক জনবানী প্রতিবেদকের অনুসন্ধানী রিপোর্টে ধরা পরেছে- ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সাকুচিয়া আবদুর রহমান সিকদার দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রধান পরিচালক শিহাব উদ্দিন কর্তৃক  এতিমের টাকা লুটপাটের তথ্য ও চিত্র। 


আবদুর রহমান সিকদার দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসাটিতে তেমন ছাত্র-ছাত্রী চোঁখে দেখা না গেলেও মাত্র ১২০জন শিক্ষার্থীর অবস্থান দেখা গেছে। মাদ্রাসাটিতে এতিমখানা রয়েছে বিধায় তা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের অর্ন্তভুক্ত। 


এতিমদের বিষয়ে মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক(মুহতামিম) শিহাব উদ্দিন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান-আমাদের মাদ্রাসাতে প্রায় ৬০জন এতিম রয়েছেন এবং প্রতিমাসে ভোলা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর হইতে প্রতিজন এতিমের জন্য দুই হাজার টাকা করে সর্বমোট একলক্ষ বিশহাজার টাকা সরাকারি অনুদান আসে।

 

এদিকে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সাকুচিয়া আবদুর রহমান সিকদার দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা’য় মাত্র ২০জন এতিম ছাড়া অন্য কোন এতিম নেই বলে জানা যায়। বাকী ৪০জন ছাত্রের ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতিমাসে সরকারি অনুদান বাবদ ৮০হাজার টাকা লুটপাট করার অভিযোগ এসেছে আবদুর রহমান সিকদার দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা পরিচালক শিহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। 


এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে এতিমখানার প্রধান পরিচালক(মুহতামিম) শিহাব উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান-আমি এসব বিষয়ে কোন প্রকার বক্তব্য দিতে পারবো না। 


পুরো মাদ্রাসার চিত্র যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এতিমখানার সাইনবোর্ড টাঙানো প্রতিষ্ঠানটি কোন রকম যেন ঢিলেঢালা ভাবে চলছে। জানালা-দরজাও নরবড়ে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০ জন ভাতাভোগী এতিম থাকলেও বাস্তবেও তা পাওয়া যায়নি। 


ভোলা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে জনবানী’র প্রতিবেদককে  বলেন-তাদের নিয়ম অনুযায়ী, যাদের মা-বাবা বা শুধু বাবা নেই তারা বরাদ্দ পাবে। কোন এতিমখানার সুপারগন যদি তাদের এতিমখানার এতিমদের ভুয়া তথ্য দিয়ে এতিমের টাকা নিজেরা সুবিধাভোগ করার জন্য জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে তালিকা দিয়ে থাকেন তাহলে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড বাতিলসহ পূনরায় টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা করা হবে। 


আবদুর রহমান সিকদার দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা’র বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরএক্স/