শ্রীমঙ্গলের করলার বাম্পার ফলন
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, ৩১শে মার্চ ২০২৩
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে করলার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নে পাড়ের টং গ্রামের বেশ কিছু কৃষক কয়েক বছর ধরে করলার চাষ করে আসতেন। প্রতিবছরই বাম্পার ফলন হচ্ছে এবার ফলন বেশি হওয়ায় গ্রামের নাম পড়ছে করলার গ্রাম। কেউ সবজির গ্রামও বলেন, যে যে নামেই ডাকেন না কেন গ্রামের মূল নাম পাড়েরটং।
গ্রামের ভিতর প্রবেশের পর দৃষ্টি জুড়ে দেখা মিলে করলার মাচাং। সবুজ পাতায় ঘেরা এই মাচার নিচেই ঝুলে আছে করলাগুলো। অন্য বছরের মতো এ বছরও করলার চাহিদা ব্যাপক থাকায় দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা করলা কিনে ট্রাকভর্তি করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন পাড়ের টং গ্রামের করলা। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের প্রান্তিক চাষিরা।
গ্রামের করলা চাষী মো. নসু মিয়া জানান, তিনি বিভিন্ন জাতের করলা বীজ এনে প্রথম পাড়ের টং গ্রামে বানিজ্যিকভাবে চাষ করেন। পরে তাঁর বাম্পার ফলন দেখে অনেকে করলা লাগানো শুরু করেন। এখন গ্রামের ঘরে ঘরেই করলা চাষী। তিনি বলেন, “গ্রামের অনেক মানুষ এখন করলা চাষ করছে। নিজেরা সাবলম্বী হইছে এটা দেখে আমার ভালো লাগে। এখনও কেউ আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসলে আমি সাহায্য করি।
গ্রামের আব্দুস সালাম বলেন, আমার নিজের জমি নাই। আমি প্রতিদিন অন্যের খেতে কাজ করে ৩শ/৪শ টাকা মজুরি পাই। এই করলাসহ অনান্য সবজি বিক্রয়ের জন্য পাড়ের টং এলাকায় খোলা পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজার। যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য পাইকার ভিড় করেন করলা ক্রয় করতে।
পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, এখানে আমরা একটি দাম নির্ধারণ করি। পাইকাররা এই দামেই কিনে নিয়ে যান। তিনি বলেন, প্রতিদিন আট/দশ হাজার কেজি করলা এই কালেকশন পয়েন্ট থেকে বিক্রি হয়।
শ্রীমঙ্গল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান জানান, এই গ্রামের প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে লালতীর সীডের টিয়া ও টিয়া সুপার, এসিআই সীডের পাপিয়া সুপার, সুপার গোল্ড জাতের করলা চাষ করেছেন বেশিরভাগ কৃষক। করলা চাষ করে কৃষকরা যেমন সাবলম্বী হয়েছেন তেমনি দৈনিক মজুরি হিসেবে করলা খেতে কাজ করে স্থানীয় নারী পুরুষরা লাভবান হচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিভিন্ন জাতের করলার চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর করলার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছে।
আমরা কৃষকদের মাঝে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরণে সহায়তা প্রদান করেছি। করলা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় এ বছর যতেষ্ট সাফল্য অর্জিত হচ্ছে এবং দূর-দূরান্তের পাইকাররা এসে সরাসরি প্রান্তিক কৃষক ও স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাজে করলা ক্রয় করায় এ অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্যের চাঁকা ঘুরছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে করলা চাষিরা আরও লাভবান হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আরএক্স/