ভাঙ্গায় বৃষ্টিতে বাঙ্গি চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, ৩রা এপ্রিল ২০২৩


ভাঙ্গায় বৃষ্টিতে বাঙ্গি চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি
বাঙ্গি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাঙ্গি চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী নামক স্থানে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে বাঙ্গির। 


মাঠ জুড়ে প্রচুর বাঙ্গি উৎপাদন হলেও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বাঙ্গি খেতে পানি জমায় বাঙ্গি ফেটে যেতে শুরু করেছে। এছাড়া বৃষ্টিতে গাছগুলো কাদা মাটিতে মিশে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার সদরদীর বাঙ্গি এ অঞ্চলের মানুষদের কাছে খুবই বিখ্যাত। খেতে সুস্বাদু এসব বাঙ্গি ভাঙ্গা ছাড়াও মাদারীপুর, ফরিদপুর ,শরীয়তপুর এবং গোপালগঞ্জে ব্যাপকভাবে বিক্রি হচ্ছে। ওই অঞ্চলের বিক্রেতারা খেত থেকে প্রতিদিন সকালে এসব বাঙ্গি সংগ্রহ করছেন। তারা স্তুপি কৃত বাঙ্গি দরাদরি করে কৃষকদের নিকট থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 


কেউবা বাঙ্গি খেত কিনে ফেলেছেন। ফরিদপুরের সদর উপজেলার মহিলা রোডের ব্যবসায়ী শাকিব জানান, তিনি বাছাই করে ২০০ বাঙ্গি ১২০০০ টাকায় কিনেছেন। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাটের ব্যবসায়ী সাইদুল এবং হেদায়েত খেত থেকে বাঙ্গি কেনার জন্য ভাঙ্গার সদরদী এসেছিলেন। 


তারা জানান, ভাঙ্গার বাঙ্গি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। ক্রেতারা ভাঙ্গার বাঙ্গি আছে কিনা জানতে চায়? ভাঙ্গার বাঙ্গি পেলে তারা দরাদরিও করে না। তারা বলেন আমরা প্রতিদিন এখান থেকে বাঙ্গি কিনে নিয়ে মাদারীপুরের টেকেরহাট, রাজৈর এবং গোপালগঞ্জ সদরের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকি।ভাঙ্গার সদরদী গ্রামের কৃষক সালাম বেপারী বলেন, তিনি এ বছর ২৫ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। 


তিনি বলেন, বাঙ্গি উৎপাদনে খরচ খুব বেশি হয় না। তবে মাঠে প্রচুর পরিমাণ পানি দিতে হয়। শারীরিক পরিশ্রম অনেক বেশি করতে হয়। একই গ্রামের কাদের বেপারী ৫৪ শতাংশ জমিতে, সোহাগ বেপারী ২৪ শতাংশ জমিতে, মাসুদ সেখ তিন বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। 


তারা বলেন ,বাঙ্গি খেতে কালো সার এবং লাল সার প্রয়োগ করতে হয়। কিছু কীটনাশক দিতে হয়। তবে উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ অনেক বেশি। এ বছর বাঙ্গির ব্যাপক উৎপাদন সত্ত্বেও শেষ সময়ে এসে বৃষ্টিতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। জানা যায় ২০ থেকে ২২ বছর পূর্বে এ অঞ্চলে বাঙ্গি চাষ শুরু হয়। তখন থেকে প্রতি বছর বাড়ছে বাঙ্গি চাষ। সরজমিনে গতকাল সদরদী বাঙ্গি খেতে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা ঝাঁকা ভরে খেত থেকে বাঙ্গি তুলে রাস্তায় নিয়ে আসছেন। 


তবে প্রচুর পরিমাণ ভাঙ্গি ফেটে ফেটে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। কিছু বাঙ্গি পচে গেছে।তারা বলেন, আমাদের বাঙ্গি বিক্রি করতে দূরে যেতে হয় না। ব্যবসায়ীরা আমাদের এখান থেকেই কিনে নেয়। রমজান মাসে বাঙ্গি পেকে যাওয়ায়- ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। 


তবে বৃষ্টির কারণে তাদের চোখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা যায়। ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম জানান, আমরা পুরো খেতের অগ্রিম টাকা দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে কিনেছিলাম ।কিন্তু বৃষ্টির কারণে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। এ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, ভাঙ্গা সীমিত আকারে বাঙ্গি চাষ হচ্ছে। বৃষ্টিতে কৃষকদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।


আরএক্স/