সূর্যমুখী চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এক তরুণ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, ৫ই এপ্রিল ২০২৩


সূর্যমুখী চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এক তরুণ
সূর্যমুখী

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অন্যান্য সব ধরনের ফসলের ন্যায় সূর্যমুখী ফুল চাষের জন্যও উপযোগী। স্বল্পসময়ে কম অর্থ ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


ফুলকে সবাই কমবেশি ভালবাসে।কেউ কিনতে,কেউ চাষ করতে আবার কেউ সৌন্দর্য দেখতে। আর এ ফুল যদি হয় শস্য ক্ষেতের সুন্দর হলুদ সূর্যমুখী তাহলে তো কথাই নেই।


এই রকম এক নান্দনিক চিত্র দেখা যায় নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ১০ নং কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাম্মনজাত গ্রামে। যেখানে প্রতিদিন শতশত ফুলপ্রেমী জড়ো হন সূর্যমুখী বাগানের সৌন্দর্য দেখতে। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলেই এর নাম হয়েছে সূর্যমুখী। কেন্দুয়াতে ২০ শতাংশ  জমিতে এই দৃষ্টিনন্দন সূর্যমুখী চাষ করে সারা ফেলেছেন ব্রাম্মনজাত গ্রামের আবুল হাসেম মল্লিকের ছেলে রাফাত হাসান মল্লিক নামের এক তরুন উদ্যোক্তা। 


তিনি সায়মা শাহজাহান  একাডেমির নবম শ্রেনীর ছাত্র। সূর্যমুখী ফুলের বাগান মালিক রাফাত হাসান মল্লিক বলেন  আমি একজন ছাত্র।লেখাপড়ার পাশাপাশি শখ থেকেই আমার ভাই ও আমার সূর্যমুখী চাষের প্রতি আমার আগ্রহ জন্মে। আর সূর্যমুখী ফুলের চাষে লাভ অনেক বেশি তাই  মুলত ২০ শতাংশ  জমিতে পরীক্ষামুলক ভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করি।উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রনোদনা হিসাবে সূর্যমুখী ফুলের বীজ  ও সার দিয়েছেন এবং বিভিন্ন সময় ফুল গাছের রোগবালাই হলে ঔষধ সহ সাহায্য ও সুপরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন ।


তিনি বলেন, ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকা আর ফলন ভাল হলে ৪ মনের মত বীজ হতে পারে।৪ মন বীজের দাম আশা করছি ১ লাখ টাকা হবে।আমার এই বাগানের নাম দিয়েছি ' মল্লিক সূর্যমুখী বাগান প্রদর্শনী '।ফুলের বাগান দেখতে প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থী ভীড় করছেন।আমার এই সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন সূর্যমুখী চাষ করে উদ্যোক্তা হতে।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় সূর্যের দিকে মুখ করে আছে ফুল।সবুজের মাঝে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের শোভা উপভোগ করতে বিনামূল্যে  নয়, বাগানে ঢুকে নিজেকে রাঙ্গাতে হলে গুনতে হয় মাথা পিছু ২০ টাকা।


সূর্যমুখী ফুলের বাগান ঘুরে দেখতে আসা এক দর্শনার্থী  বলেন সূর্যমুখী ফুল সূর্যের দিকেই মুখ ঘুরিয়ে থাকে।এই জন্য হয়ত তার নাম হয়েছে সূর্যমুখী। বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাই  পরিবারকে নিয়ে এখানে আসা।তবে এখানের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর লাগছে তাই সবাই মিলে মনোরম দৃশ্য ফ্রেমে বন্দী করেছি।


উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এখানকার চাষীরা।রোগবালাই রোধ ও পরিপক্ষ বীজ পেতে জমিতে নির্দিষ্ট পরিমান ইউরিয়া, টিএসপি,এমপি,জিপসাম ইত্যাদি সার প্রয়োগ করতে হয়।ফুলের প্রতিটি মাথায় বীজের সংখ্যা থাকে ৫০০- ৬৫০ টি।বীজ বপন থেকে পরিপক্ষ হওয়া পর্যন্ত ৯০-১১০ দিন লাগে ফসল সংগ্রহ করতে।


কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা  বলেন উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে  সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। ২০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রনোদনা হিসাবে বীজ  ও সার দেয়া হয়েছে।সূর্যমুখীর বৈজ্ঞানিক নাম Helianthus annuus।সূর্যমুখী ফুল খুব অল্প পরিশ্রমে চাষ করা যায় এবং রোগবালাই হয় খুবই কম।


এ ফলের বীজ থেকে তৈল হয় যা স্বাস্থ্যসম্মত এবং সয়াবিন তৈলের উপর নির্ভরতা কমায়।এতে থাকা লিনোলিক এসিড ভাল রাখে হ্নদপিন্ডকেও।তিনি আরো বলেন সূর্যমুখী ফুলের বাগান যাতে আরো বৃদ্ধি পায় সে জন্য নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে কৃষি বিভাগ পূর্ণ উদ্যমে কাজ করছে।


আরএক্স/