শ্রীনগরে ধানের জমিতে ব্লাস্ট রোগের হানায় দিশেহারা কৃষক


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, ১২ই এপ্রিল ২০২৩


শ্রীনগরে ধানের জমিতে ব্লাস্ট রোগের হানায় দিশেহারা কৃষক
ব্লাস্ট ও শীষ ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে আগাম ধান কেটে ঘরে তুলছে কৃষক

শ্রীনগরে আগাম পাকা ধান কাটার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শস্য ভান্ডার খ্যাত আড়িয়াল বিলসহ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন চকব্যাপী এখন শুধুই সোনালী ফসলের সমারোহ। এ বছর ধানের বাম্পার ফলনের আশঙ্কা করা হলেও ধানে গীট ব্লাস্ট ও শীষ ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। ব্লাস্ট রোগটির আক্রমণে ধানের থোড় অবস্থায় শীষের গোড়া ও গীটে কালো দাগের সৃষ্টি হচ্ছে। 


এতে ধানের ছড়া গীট ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি ধীরে ধীরে পুরো জমিতে রোগটি ছড়িয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষকিসাধন হচ্ছে। ধান বাড়ছে টীচার পরিমান। কৃষকের কাঙ্খিত ফলন পাওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর অধিক জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে কর্মযজ্ঞ শুরু করেন কৃষকরা। 


এর মধ্যে বির্স্তীণ আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশেই প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধান চাষ করা হয়। আড়িয়াল বিলের বির্স্তীণ ভূমির ধান পরিপক্ক হয়ে গেছে। সোনালী ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক পরিবার। 


ধারণা করা হচ্ছে আসন্ন বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে আড়িয়াল বিল এলাকায় পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটা উৎসব। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আড়িয়াল বিল এলাকার বাড়ৈখালী, ষোলঘর, গাদিঘাট, আলমপুর, শ্রীধরপুর, মদনখালীতে বেশীর ভাগ জমিতে ধান পেকে গেছে। 


এসব ধান কাটতে সংশ্লিষ্ট কৃষি শ্রমিক আনা হচ্ছে। ধান কাটা ও মাড়াই কাজের জন্য গৃহস্তরা আধুনিক যন্ত্রপাতি গোছাচ্ছেন। বড় গৃহস্তরা বোঙ্গা মেশিন নামক ধান মাড়াইয়ের নতুন যন্ত্র কিনে আনছেন। 


বিল পাড়ের কৃষকরা জানান, ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় দ্রুত ধান কাটার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বৈশাখ মাসের শুরুতেই জমিতে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। ব্লাস্ট রোগমুক্ত জমিতে বিঘা প্রতি ২৮-৩০ মণ ধান উৎপাদণের টার্গেট করছেন তারা। 


এছাড়া উপজেলার সদর এলাকার গোল্ডেন সিটি, পাটাভোগ, খৈয়াগাঁও, বীরতারাসহ বিভিন্ন চকে অসংখ্য জমিতে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ হয়েছে। লক্ষ্য করা গেছে, জমিতে অপরিপক্কা ধানের ছড়া গীট থেকে ভেঙ্গে ঝুলে আছে। 


হরপাড়া এলাকার আব্দুল আউয়াল বলেন, ১৫ গন্ডা জমিতে (১০৫ শতাংশ) ধাণ চাষ করেছি। ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ পাটাভোগের শেখ দেলোয়ার, শেখ মালেক, মো. কামরুল জানান, পাটভোগ চকের ধান এখন আধা কাঁচা। এ চকের প্রায় জমিতেই ব্লাস্ট রোগের থাবায় অর্ধেক ধানও পাওয়া যাবেনা। 


উপজেলা কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, সারা বাংলাদেশেই ব্লাস্ট রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ব্রি- ২৮, জাতের ধানের জমিতে রোগটির আক্রমণ বেশী হয়েছে। রোগটি প্রতিরোধে আমরা স্থানীয় কৃষকদের জমিতে ছত্রানাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। উপজেলায় এ বছর ৯ হাজার ৯শ’ ৭৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ধান উৎপাদণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪২ হাজার ৫শ’ ৬০ মেট্রিক টন। এতে প্রদর্শনী রয়েছে ৫০টি। সরকারিভাবে এখনও ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়নি।


আরএক্স/