কুষ্টিয়া-৪: আ.লীগ-বিএনপি দু’দলেই গ্রুপিং, ভোটে হবে হাড্ডা হাড্ডি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:২৪ অপরাহ্ন, ১৬ই মে ২০২৩
কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও খোকসা দুটি উপজেলা নিয়ে কুষ্টিয়া-৩ নির্বাচনী এলাকা-৭৮ । আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনটি সব সময় গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে আসছে।
বিশেষ করে কুমারখালীর তাঁত শিল্প দেশজুরে সুনাম অর্জন করেও বিদেশেও ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলেছে। যে কারনেই এই অঞ্চলটিকে তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত বলা হয়। এখানকার মানুষ তাঁতের উপর নির্ভর করেই জীবনজীবিকা ধারণ করে আছে। এই আসনটি স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামীলীগের দখলে চলে আসে।
বিএনপি এবং ১৯৯৬ ও ২০২১ এ বিএনপি নির্বাচিত হলেও উল্লেখযোগ্য তেমন কোন উন্নয়ন করতে পারেনি। ফলে বিএনপির জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। এর পর থেকে আসনটি আবারো আওয়ামীলীগের দখলে চলে আসে।
কিন্তু তারাও তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখতে পারছে না। এলাকার উন্নয়নের নামে চলছে নানা অনিয়ম আর দূর্নীতি। এলজিইডির কাজে যত দুর্নীতি আর অনিয়ম হয়েছে যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জজ এর দলীয় গোড়ামির কারনেই দলের মধ্যে ব্যাপক হারে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছে বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে।
একদিকে কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান নিজেই সরাসরি তার বিরোধীতায় নেমে পড়েছেন। এ ছাড়া সাবেক এমপি আব্দুর রউফ ও সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফরও মাঠে ব্যাপক ভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এবার কেউ যেন কাউকে ছাড় দিবেনা বলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জজ, কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ ও সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর।
অপরদিকে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দলীয় ভাবে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক দিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এমপি জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমী অপর দিকে বার বার নির্বাচিত সাবেক কুমারখালী পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম আনছার প্রামানিক। রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নূরুল ইসলাম আনছার প্রামানিক এগিয়ে থাকলেও সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমী এখন পর্যন্ত পিছিয়ে পড়েছে। মাঠ দখলে রেখেছেন নূরুল ইসলাম আনছার প্রামানিক।
তিনি বলেন দলীয় ভাবে তাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনটি পুনঃ উদ্ধার হবে। তবে সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমীও মাঠ দখলে মরিয়া। তিনি দলীয় ভাবে পুনরায় মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে দলের নেতাকর্মীরা জানান।
কুমারখালী- খোকসা নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১ হাজার ১১টি। এর মধে কুমারখালী উপজেলায় ২ লাখ ৮১ হাজার ৮’শ এবং খোকসা উপজেলায় ১ লাখ ১৯ হাজার ২১১জন ভোটার রয়েছে।সাধারণ ভোটারদের মতামত অনুযায়ী যদি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয় আর যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে যত গ্রুপিংই থাকনা কেন হাড্ডাহাড্রি লড়াই হবে।
তবে এই আসনটিতে জামায়াতের শক্ত ঘাটি রয়েছে। যদি তারা নির্বাচনে আসে তবে তাদেরকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। মোঃ আবজাল হুসাইন নামের জামায়াতের নেতা প্রার্থী হবেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপি জোট আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে কিনা তা নিয়ে নেতা কর্মীরা না ভাবলেও অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবী আদায়ের লক্ষে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
আরএক্স/