জলঢাকায় কৃষকের স্বপ্ন চাল কুমড়ায়


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, ১৪ই জুন ২০২৩


জলঢাকায় কৃষকের স্বপ্ন চাল কুমড়ায়
ছবি: জনবাণী

নীলফামারীর জলঢাকায় বাণিজ্যিকভাবে দিন দিন বাড়ছে চাল কুমড়ার চাষ। সারি সারি চাল কুমড়া ও হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো চাল কুমড়া ক্ষেত। 


থোকায় থোকায় সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে অজস্র হলুদ রঙের ফুল ও চাল কুমড়া। স্বল্প সময়ে উচ্চ ফলনশীল চাল কুমড়ার চাষ এখন ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। 


প্রতি সপ্তাহে এই চাল কুমড়া বিক্রি করতে পেরে চাষিরা অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়েছেন। কীটনাশক মুক্ত এই নিরাপদ সবজি চাষে সফলতার পর এবার জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে চাল কুমড়াসহ অন্যান্য সবজীর চাষ। 


উপজেলার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে মাচায় মাচায় দুলছে চাল কুমড়া। মৌসুমের শুরু থেকেই বাজারে সবজির চাহিদা থাকায় স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে জলঢাকা উপজেলার উৎপাদিত চাল কুমড়া। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছে চাল কুমড়া চাষিরা। 


সরেজমিনে উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড খামাত পাড়া গ্রামের চাল কুমড়া চাষি জুয়েল চন্দ্র রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী ২০ শতক জমিতে শসা রোপন করি। শসার আবাদ শেষে যে মাচা তৈরি করা হয়েছিল। শসা আবাদ শেষে সেই স্থানে আমি চাল কুমড়ার বীজ রোপন করি। এতে একই মাচায় একই খরচে দুটি ফসল আবাদ করতে পেরেছি। এতে আমার বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়নি। শুধু কিছু সার ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে। চাল কুমড়ারও বাম্পার ফলন হয়েছে। আর এ চাল কুমড়া সবজি মূলত বোনাস ফসল হিসেবে পেয়েছি। 


আরও পড়ুন: জলঢাকায় ইরি বোরো ধান চাষে বাড়তি খরচ


এ পর্যন্ত আমি ৬০০ পিচ চাল কুমড়া বিক্রি করতে পেরেছি। আরো ৬০০ পিচ চাল কুমড়া বিক্রি করতে পারবো। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৪ হাজার টাকা। 


একই এলকার কুমড়া চাষি কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ৪৫ শতক জমিতে চাল কুমড়া চাষ করেছি। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ শত চাল কুমড়া বিক্রি করতে পেরেছি। আরোও ৭০০ পিচ চাল কুমড়া বিক্রি করতে পারবো। শসা আবাদ শেষে এ চাল কুমড়া রোপন করেছি। এতে তেমন একটা খরচ করতে হয়নি। প্রতি সপ্তাহে ব্যবসায়ীরা ক্ষেতে এসেই চাল কুমড়া নিয়ে যায়। এছাড়া এ গ্রামের আরও ২০টি পরিবার এ চাল কুমড়া আবাদ করেছেন।


এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার কৃষি খাতে সফলতা অর্জন সর্বজন স্বীকৃত। ভালো বীজ নির্বাচন এবং সঠিক পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শসহ সব ধরণের সহযোগিতা প্রদানে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশেই রয়েছে। আমরা সব সময় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। মৌসুমভিত্তিক নিরাপদ শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করাসহ দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। চাল কুমড়া চাষের জন্যে এ উপজেলায় খুবই উপযোগী। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাল কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় চাষিরাও বেশ খুশি।


জেবি/ আরএইচ/