চীনের উইঘর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৩
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘর মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, গ্রেফতার জাতীগত নিধনের ও প্রতিবাদে বুধবার (৫ জুলাই) সকালে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পঞ্চগড় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। উইঘরদের ‘উইকমিরি ম্যসাকার ‘ দিবস উপলক্ষে সংগঠনটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, প্রবীণ সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, দিশারী নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কলামিষ্ট মাহমুদ হোসেন সুমন, তরুণ সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম শান্তি, শ্রমিক নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদ, ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম ইরান,প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।বক্তারা, অবিলম্বে চীনের হাতে আটক দশ লাখ উইঘর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেওয়ার জোর দাবী জানান। চীনের উইঘর মুসলিমদের ওপর অত্যচার বন্ধ করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরী করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহবান জানান।মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের ৫ জুলাই মুসলিম উইঘুররা তাদের স্বদেশের রাজধানী উরুমকিতে চীনা দখলদার সেনাবাহিনী এবং তার ঔপনিবেশিক হান জনগোষ্ঠির দ্বারা নির্মমভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছিল। ওই যৌথ হামলায় দু হাজারের অধিক উইঘর নারী ও পুরুষ নিহত হয়। পরবর্তী এক সপ্তাহজুড়ে রাষ্ট্রিয় সাহায্যপুষ্ট হান জনগোষ্ঠি পিটিয়ে কুপিয়ে আরও কয়েক হাজার উইঘর নাগরিকদের হত্যা করে।
চীনা মিডিয়া ও রাষ্ট্রিয়ভাবে বিষয়টি গোপন রাখা হলে পরবর্তিতে এ খবর দেশের বাইরে চলে যায়। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যাটি ৭ হাজারের কাছাকাছি বলে উল্লেখ করা হয়। বিশ্বজুড়ে উইঘুর প্রবাসীরা প্রতি বছর দিবসটি স্মরণে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের আয়োজন করে। এদের সঙ্গে গত বছরগুলোতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের মানবতাকামী মানুষরা। বক্তারা বলেন, গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার নামে উইঘর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালোনো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দেওয়ার আহবান জানান। বিশ্বজুড়ে এদিনটি ‘উরুমকি ম্যসাকার ‘ দিবস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ।উইঘর মুসলিমদের নামাজ রোজা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে । মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। রোজা না রাখতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তারা বলেন, মুসলিম হিসেবে পরিবারের মধ্যে যাতে বেড়ে উঠতে না পারে সেজন্য উইঘুর মুসলমান সন্তানদের তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কৌশলে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাত না ঘটালে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের জরায়ুতে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ডিভাইস প্রতিস্থাপনের আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
আরএক্স/