মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে ঘর ভেঙ্গে উচ্ছেদের অভিযোগ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:০৪ অপরাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৩


মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে ঘর ভেঙ্গে উচ্ছেদের অভিযোগ
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম মুন্সী

মোংলায় এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদেরকে গাছের সাথে বেঁধে বসত ঘর ভেঙ্গে দিয়ে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ সময় উচ্ছেদ করতে আসা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলমের পা ধরেও রক্ষা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। উল্টো তাদের ওপর নিরাপত্তা কর্মীদের দিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম মুন্সী। 


বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে মোংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সমম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল মুন্সী বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। দেশ স্বাধীন করেও তার নিজস্ব কোন জমি বা বাড়ী নেই। তাই ২০০২ সাল থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা লীজ নিয়ে খাজনা দিয়ে স্ত্রী ও সাত ছেলে মেয়ে নিয়ে সেখানে ঘর উঠিয়ে বসবাস করে আসছেন। পশুর নদীর পাড়ে স্থায়ী বন্দর এলাকায় গোলপাতার ছাউনির ঘর তুলে সেখানে বসবাস করে আসছেন। তার আয়ের উৎস কৃষি কাজ ও সরকারী ভাতা। 


২০১১ সালে জায়গা বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলে বন্দর কর্তৃপক্ষের তৎকালীন চেয়ারম্যান তাদের জায়গায় বসবাস করার অনুমতি দেন। সেই থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে তিনি সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু গত ৪ জুলাই বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলম ম্যাজিষ্ট্রেট ও নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে এসে তার ছেলে-মেয়েদের বনদস্যুদের মত গাছের সাথে বেঁধে তার বসত ঘর থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে দেন। 


এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মুন্সীর স্ত্রী রহিমা বেগম তার হাত পা ধরে কেঁদে কেঁদে আকুতি করলে তাকে গালিগালাজ ও নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে মারধর করে এবং তার ছেলে রেজাউল ও জামাতা তৌহিদকে এক মাসের কারাদন্ড দেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি। এ সময় পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলমের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রহিমা বেগম নানা অভিযোগ তুলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তার এবং তার পরিবারের ওপর নির্যাতনের বিচার চান। 


এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মুন্সী দীর্ঘদিন বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গায় অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন। একাধিকবার তাকে সরে যেতে বললেও না যাওয়ায় গত ৪ জুলাই তাকে উচ্ছেদ করা হয়। 


তার পরিবারের ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি দাবী করে এ কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে আপ্যায়ন করে ওই জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের  প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, যেহেতু নুরুল ইসলাম মুন্সী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাই বিষয়টি অধিকতর যাচাই পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


আরএক্স/