মানুষ যে কারণে দুঃখের গান শোনে
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:২৪ অপরাহ্ন, ১০ই অক্টোবর ২০২৩
মানুষের জীবনেই কম বেশিসুখ-দুঃখ আসে পালাক্রমে। যখন মানুষ সুখে থাকে তখন হাসি-খুশি সবার সাথে মিলেমিশে থাকে। ঠিক তেমনই দুঃখ বা মন খারাপের সময় মানুষ একা একা থাকতে পছন্দ করে। একই সঙ্গে বেশিরভাগ মানুষই মন খারাপের সময় শোনেন কষ্টের গান। তবে কষ্টের গান শোনার কারণ কী?
এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষ মন খারাপের সময়ই দুঃখের গান শুনতে পছন্দ করেন। যা তাদের দুঃখের গান শোনার মাধ্যমে মানসিক শান্তি পায়। মিউজিক থেরাপি মানসিক প্রশান্তি, এমনকি মন মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতেও গান সহায়তা করে।
বিজ্ঞান বলছে, দুঃখের গান শোনার মাধ্যমে প্রোলেকটিন হরমোন বাড়ায়। মানুষের দুঃখের গান শোনার অন্যতম কারণ হচ্ছে এটি প্রোলেকটিন হরমোন বৃদ্ধি করে। প্রোলেকটিন হরমোনের বিভিন্ন ধরনের মানসিক প্রভাব রয়েছে। স্তন্যদানের সঙ্গে এর সংযোগ গভীর রয়েছে বলে জানা গেছে।
এটি নারী ও পুরুষ উভয়ের মঝেই নির্গত হয়। দুঃখ বা অন্য কোনো চাপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এর বেদনানাশকের প্রভাব আমাদের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণার দেখা গেছে, নস্টালজিক করে তোলে, পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে দুঃখের গান বড় ভুমিকা পালন করে। নস্টালজিক স্মৃতি মনে পড়ার কারণে মানুষের মেজাজ উন্নত হয়। বিশেষ করে যখন স্মৃতিগুলো জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ মুহূর্তের সঙ্গে সম্পর্কিত হয় যেমন-বিয়ে, প্রেম, উচ্চ বিদ্যালয়,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়।
গানের মাধ্যমে দূর হয় উদ্বেগজনক আবেগ। তাছাড়াও গানের মাধ্যমে দুঃখ ও রাগের মতো নেতিবাচক আবেগগুলোও দূর করা যায়। যখনি কেউ দুঃখের গান শুনে কান্না করেন; ঠিক তখনি তার হতাশা ও নেতিবাচক অনুভূতিগুলো দূর হয়ে যায়।
যে কোন গানের কথা ও সুর সকল মানুষকে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে দুঃখের গান শোনার মাধ্যমে মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দুঃখের গান শ্রোতাকে কষ্টদায়ক পরিস্থিতি (যেমন-বিচ্ছেদ, মৃত্যু ইত্যাদি) থেকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে আর এর পরিবর্তে এটি গানের দিকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
যখন কোন ব্যক্তি প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকেন এবং একাকিত্ব অনুভব করে; তখন সংগীত ওই ব্যক্তিকে সঙ্গ দেয়। কষ্টের সময় দুঃখের সংগীতকে কাল্পনিক বন্ধু হিসেবে অনুভব করা যেতে পারে।
গান শোনার মাধ্যমে মেজাজ, আবেগ,স্মৃতি ও মনোযোগ প্রভাবিত হয় বলে অনেক গবেষণায় প্রমাণিত। মানসিক প্রশান্তি পেতে এ কারণে মিউজিক থেরাপি বেশ কার্যকরী।
মানসিক চাপ কমানোর জন্য এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশকে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল এবং আরেক অংশকে গান শোনানো হয়েছিলো।
পরবর্তীতে দেখা যায়, যে রোগীদের গান শোনানো হয়েছিল, তাদের উদ্বেগ কম ছিল। তাদের ওষুধ সেবনকারীদের তুলনায় কর্টিসল ছিল কম।
আরএক্স/