৪ ডিসেম্বর দর্শনা মুক্ত দিবস
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৩
৪ ডিসেম্বর দর্শনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দর্শনা মুক্ত হয়। পাক-হানাদার বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে তিন দিকে থেকে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে পাকবাহিনীকে হটিয়ে দর্শনা মুক্ত করে।
মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারে দর্শনা শান্তি পাড়া ও পরাণপুর গ্রামের মাঁঝামাঝি মাঠে পাক হানাদার বাহিনী ঘাটি করে আছে। এ খবর পেয়ে যুদ্ধকালীন কমাণ্ডার লিয়াকত আলীর নেত্রীত্বে আব্দুল হামিদ তোতা, নুর হাকিম, গোলাম হোসেনসহ ৩০ মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩০০ জন মিত্র বাহিনী ভারতের গেদে বর্ডারের ক্যাম্পে বসে রাতের খাবার খেয়ে পাক-বাহিনীর অবস্থানের দিকে রওনা হয়।
বারাদী সীমান্ত পেরিয়ে পারকৃষ্ণপুর মদনা হয়ে গোবিন্দপুর গ্রামের নিকটবর্তী স্থান দিয়ে রাবারের নৌকা চেপে ৩০ জন করে মাথাভাঙ্গা নদী পার হয়ে ধাঁপাড়ী ও তালবাগান মাাঠের উত্তর-পশ্চিম কনে আবস্থান নেই বলে লিয়াকত আলী জানান।
তিনি আরো বলেন, আমরা ৩৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী ধাঁপাড়ী ও তালবাগান মাাঠের উত্তর-পশ্চিম কনে পৌঁচ্ছে আমরা অবস্থান নিয়ে ব্যাংকার খুড়ে ফেলি। এরপর রেকি করে পাকবাহিনীর আবস্থান বুঝে রাত ৩টার দিকে সকল প্রস্তুতি সেরে পাক-হানাদার বাহিনীর গুলি, সেল, মোটার হামলা শুরু করি। রাতে এক নাগাড়ে গুলি বর্ষণ শুরু করলে পাক-হানাদার বাহিনীও পাল্টা সেল মারতে শুরু করে।
দীর্ঘ প্রায় ২ ঘন্টা ৪৫ ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলে। মুহুর-মুহুর গুলি, সেল মটার সেল নিক্ষেপ করার ফলে এক পর্যায়ে পাকবাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে। আমাদের লোকেশন বুঝতে না পেরে পাক-বাহিনী রেলগেট ও ডাঙ্গাপাড়া মাঠের দিকে সেল, মটার ও গুলি বর্ষন করতে থাকে। ফলে আমাদের তেমন কোন ক্ষতি না হলেও মিত্রবাহিনীর দুইজন নিহত ও একজন আহত হয় পাক-বাহিনীর।
অপর দিকে পাক-হানাদার বাহিনী ব্যাপক হতাহত হয়। একদিকে আমাদের সাথে লড়াই চলছে। অপরদিকে উথলী দিক থেকে আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাক-বাহিনীর উপর হামলা চালায়।
এ সময় তিনদিক থেকে মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে পাক-হানাদার বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পাক-হানাদার বাহিনী রেলপথ ও সড়ক পথ ধরে চুয়াডাঙ্গা শহরের দিকে পালাতে থাকে।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দর্শনা কেরু চিনিকলের জেনারেল অফিসের সামনে মিত্র-বাহিনীর প্রধান মি. বুফে ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলীর নেত্রীত্বে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। পযার্য়ক্রমে ৪ থেকে ৫ ও ৭ তারিখের মধ্যে দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা মুক্ত হয়।
আরএক্স/