কেরুজ চিনিকলের গাছ লোপাট; মাটি সরাতেই বেরিয়ে আসছে গাছের গুড়ি, তদন্ত প্রতিবেদনে গাছই কাটা হয়নি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কেরুজ চিনিকলের গাছ লোপাট; মাটি সরাতেই বেরিয়ে আসছে গাছের গুড়ি, তদন্ত প্রতিবেদনে গাছই কাটা হয়নি

বনবিভাগের অনুমোদন ছাড়াই চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরুজ  চিনিকলের বীজ উৎপাদন খামারে শতশত বিভিন্ন প্রকার সরকারি গাছ কর্তন করার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চালাই অভিযুক্তরা। 

সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, কর্তৃনকৃত গাছের নিচের অংশ মাটিচাপা দিয়েছে অভিযুক্তরা। শত শত গাছ কাটার প্রমাণ মাটি দিয়ে ঢাকা থাকলেও অদৃশ্য কারণে তা কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ছে না। অনুমোদন ছাড়া সরকারি গাছ কর্তন করায় বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি প্রধান কার্যালয়কে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।

দর্শনা কেরুজ চিনিকলে প্রতিবছর চিনি উৎপাদনের আগ মূহুর্তে বয়লারের জ্বালানি হিসাবে ঠিকাদারের মাধ্যমে খড়ি ক্রয় করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২১-২২ মাড়াই মোরসুমে ১১শ মেট্রিকটন খড়ি ক্রয় করে। মাড়াই কার্যদিবস শেষ হবার ১৮ দিন আগেই ক্রয়কৃত খড়ি শেষ হয়ে যায়। মাড়াই কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে নিজেস্ব বিভিন্ন কৃষি খামার থেকে শুকনা গাছ ও গছের ডাল কাটার নির্দেশ দেয়। এর জন্য কর্তৃপক্ষ বীজ পরিদর্শন ও কৃষিতত্ব বিভাগের ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট গাছকাটা কমিটি গঠন করা হয়। 

এরপর অভিযোগ ওঠে কমিটির প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম টুটুল বনবিভাগের অনুমোদন ছাড়াই মরাগাছ এবং গাছের ডালকাটার অযুহাতে বিভিন্ন কৃষি খামারের সরকারি শত শত মূল্যবান গাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। কর্তনকৃত গাছের কিছু অংশ বয়লারের জ্বালানি হিসাবে চিনিকলে সরবরাহ করলেও গাছের মূল্যবান অংশ আত্মসাত করার গুঞ্জন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করে তিন দিনের মধ্যে জবাব দেবার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ঘটনার ১৪ দিন পর অভিযুক্তরা সবাইকে রক্ষা করে সাংবাদিকদের অভিযুক্ত করে তারা কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (৯ মার্চ) সকালে সাংবাদিকরা পুনরায় আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামারে অনুসন্ধন চালায়। অনুসন্ধানে দেখা যায় কর্তৃনকৃত গাছের নিচের অংশ মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। মাটি সরাতেই বেরিয়ে আসে একের পর এক মূল্যবান গাছের গুড়ি। অথচ চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন সরেজমিনে তদন্তে গিয়ে কোন গাছ কাটার নমুনা দেখতে পাননি। 

অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন চোখে কালোচমা পরা থাকলে অনেক কিছু চোখে পড়ে না। যেমনটি ঘটেছে আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামারের শত শত গাছ কাটার বিষয়টি। বিষয়টি সদর দপ্তরকে খতিয়ে দেখার দবি জানিয়েছে সচেতন মহল। 

এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালকে মোশারফ হোসেনকে একাধিকার বার যোগাযোগ করো হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এসএ/