মেট্রোরেলে উপচে পড়া ভিড়, তবু স্বস্তির যাতায়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৪ অপরাহ্ন, ২২শে জানুয়ারী ২০২৪
ঢাকাবাসীর যাতয়াতে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে মেট্রোরেল। ঢাকার চিরচেনা যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকে মেট্রোরেলে চলাচল করেছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল থেকে মেট্টোরেলের স্টেশনগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেট্রোর বগিগুলোয় অবস্থাও একই।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে উত্তরা-মতিঝিল রাত পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল
শনিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে পুরোদমে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর দেখা গেছে, এমআরটি পাস ব্যবহারকারীরা টিকিট কাটার ঝামেলা এড়িয়ে দ্রুত ট্রেনে উঠতে পারলেও বিপাকে পড়েছেন অন্যরা। মেট্রোর টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন তারা। তাদের লাইন স্টেশন ছেড়ে সড়ক পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। টিকিট কাটতে দীর্ঘসময় লাগায় কাউন্টার বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
জানা গেছে, সাধারণত রাজধানীতে পিক আওয়ার সকাল নয়টা ও বিকেল পাঁচটা। অফিস শুরু ও শেষের সময়কে কেন্দ্র করে সড়কে এ সময় তীব্র যানজট দেখা যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নগরবাসীর আস্থায় পরিণত হয়েছে মেট্রোরেল। ফলে পিক আওয়ারে স্টেশনগুলোতে ভিড় দেখা যায়। মতিঝিল অংশ পর্যন্ত মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রীচাপ আরও বেড়েছে। তবে শুধু পিক আওয়ার না অন্য সময়গুলোতেও মেট্রোতে যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে।
দেখা গেছে, সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সচিবালয় স্টেশনে যাত্রীদের তীব্র চাপ চোখে পড়েছে। সেখানে মোট তিনটি মেশিন ও একটি ম্যানুয়াল বুথের সামনে শতাধিক যাত্রীকে টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া আগারগাঁও, পল্লবী স্টেশনের যাত্রীদের প্রচুর চাপ।
শুধু টিকিট কাটাই নয়, একই চিত্র মেট্রোতে উঠার সময়েও। টিকিট কাটলেও বগিতে উঠতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আছেন। সচিবালয়ের স্টেশনের যাত্রীরা উঠতে পারলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছার পর কোনো বগিতেই তিল ধরার ঠাঁই নেই। এ সময় অনেক যাত্রীকে এক বগির দরজা থেকে অন্য বগির দরজায় দৌঁড়াতে দেখা যায়।
শাহবাগ স্টেশনে চাপাচাপি করে কিছু যাত্রী উঠতে পারলেও অনেককেই ব্যর্থ হয়ে পরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। যাত্রীদের উদ্দেশ্যে নিরাপত্তা কর্মীদের পরবর্তী মেট্রোর জন্য অপেক্ষা করতে বলতে শোনা যায়। স্টেশনগুলোতে নামা যাত্রীর তুলনায় অপেক্ষমাণ যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
শেওড়াপাড়া যাওয়ার জন্য পঞ্চাশোর্ধ আব্দুল কাদির সচিবালয় স্টেশন থেকে মেট্রোতে উঠেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এই যাত্রী বলেন, মেট্রোরেলে ধারণক্ষমতার থেকে যাত্রী অনেক বেশি। দুইদিন আগে এই স্টেশনগুলো পুরোপুরি চালু হওয়ার পর যাত্রী অনেক বেড়েছে। সবার লক্ষ্য যানজট এড়িয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো।
তিনি বলেন, ‘এখানে তো তবুও উঠা যায়। উত্তরা ও মিরপুরের স্টেশনগুলো অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে অধিকাংশ ট্রেনে যাত্রীতে ভরা থাকায় ওঠা যায় না। গতকাল বিকেলে আসার সময় দুইটা ট্রেন মিস করে তারপর উঠতে পেরেছিলাম।’
এদিকে মেট্রোরেল চালুর এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এখনো অনেক যাত্রী স্বয়ংক্রিয় টিকিট কাটায় অনভিজ্ঞ। ফলে টিকিট কাটতে দীর্ঘ সময় লাগছে। আর তাতে দীর্ঘ হচ্ছে টিকিট কাটার লাইন৷ টিকিট মেশিনে সকল নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও অভিজ্ঞতা থাকায় অনেককে অন্যর সহযোগিতা নিয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে। ফলে সময় লাগছে। তাছাড়া একের অধিক নোট না দেওয়ার জন্য বলা হলেও অনেকেই এই ভুল করতে দেখা গেছে। ফলে একই কাজ একাধিকবার করতে হয় এবং দ্বিগুণ সময় লাগে।
আরও পড়ুন: কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ স্টেশন চালু, সব স্টেশনে থামবে মেট্রোরেল
মেশিনে দেওয়ার পর ময়লা ও ছেঁড়া টাকা ফেরত দেওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। এছাড়া মেশিনে ভাঙতি অর্থ না থাকায়ও বারবার অর্থ ফেরত দিতে দেখা যায়। এসব কারণে টিকিটের লাইন লম্বা হচ্ছে
ঢাকাবাসীর জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে পুরোদমে চালু হয়েছে মেট্রোরেল। মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলছে বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেল।
জেবি/এজে