উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে অবিসংবাদিত নেতা
খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) ওরস চলছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, ১লা মার্চ ২০২৪
উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে অবিসংবাদিত নেতা, প্রখ্যাত সুফি সাধক ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সত্য তরিকার ধারক, সিরাজগঞ্জের হযরত শাহ সুফী খাজা বাবা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) মহা পবিত্র ওরস শরীফ চলছে। ১৯১৬ সাল থেকে শুরু বাৎসরিক ওরশ এবার ১০৯তম বছর পার করবে।
২৯ ফেব্রুয়ারী শুরু হাওয়া ৩ দিন ব্যাপী এই ঐতিহাসিক ওরশে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ভারতের আসাম থেকে অন্তত ১৫ লক্ষাধিক জাকের সমবেত ১০৯তম ঐতিহ্যের মেলা। ২ মার্চ ১৮ ফাল্গুন (খাজা এনায়েতপুরী (রঃ) এর ওফাত দিবস) সকালে দরবারের বর্তমান গদ্দিনশীন পীর হযরত খাজা কামাল উদ্দিন (নুহু মিয়া) এর মোনাজাত পরিচালনায় বিশ্বমানবতার মঙ্গল কামনা করে বাৎসরিক ওরশ শরীফের সমাপ্ত হবে।
শেষ জামানার মহান মোজাদ্দেদ হযরত শাহ সুফী খাজা বাবা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ)। তার পবিত্র দরবার শরীফ হতে ভারতের আসাম ও বাংলাদেশে ইসলামের শান্তির বাণী তিনি আমৃত্যু প্রচার ও প্রসার করেছেন। পাশাপাশি ইসলামের ধর্মীয় বিধান মেনে সকল পাপাচার পরিহার, নৈতিকতা নিয়ে জীবন যাপন সহ মানবতার কল্যাণে নিবেদিত হতে অল্প নিন্দা ও অল্প আহারের দীক্ষা দিতেন তার কোটি ভক্ত অনুসারীকে।
খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) এর দেখানো আদর্শের এ পথ ভারত-বাংলায় খেলাফত প্রাপ্ত ১ হাজার ২৫০ টিরও অধিক খানকাহ হতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর শান্তির ‘আল্লাহু আকবার’ ঝান্ডার বানী সমগ্র পৃথিবীতে প্রচার করছেন। তার অনুসারী খেলাফত প্রাপ্ত দরবার শরীফে খাজা বাবার নামানুসারেই তা প্রচার করে আসছেন দীর্ঘকাল ধরে।
সুফি সাধক পিড়ানে পীর দস্তগীর খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) এর পরিবার ছিলেন মুলত ছিলেন ইয়েমেনের ফাতেমী বংশধর। অর্থাৎ আওলাদে রাসুল বা সৈয়দ। একই ভাবে মাতৃকুল ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রঃ) এর বংশের। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্যই তাদের আগমন। তার পঞ্চম পুর্ব পুরুষ হযরত শাহ দায়েম (রঃ) ইয়েমেন থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য ভারতবর্ষে আসেন। খাজা এনায়েতপুরী (রঃ) এর বাবা শাহ আব্দুল করিম (রঃ), মাতা-তাহমিনা বেগম (রঃ) এর ২ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ১৮৮৬ সালের বাংলা ১২৯৩ বঙ্গাদ্বের ২১ শে কার্তিক সুবেহ সাদেক জন্মগ্রহন করেন। ২০১৭ সালে খাজা এনায়েতপুরী (রঃ) এর জীবনী নিয়ে লেখা একটি বইতে উল্লেখ করা হয়, মুলত তিনি ছিলেন তার আবির্ভাবের পুর্ববর্তী সময়কালের ওলী গনের ভবিষ্যদ্বাণীকৃত এই আখেরী জামানার ‘মহান ইমাম বা প্রতিশ্রুত মোজাদ্দেদ’।
ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রত্যেক হিজরী শতকের ক্রান্তিলগ্নে ধর্মজগতে একজন করে দুরদৃষ্টি সম্পন্ন মহান ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে। যাকে কেন্দ্র করে ইসলামের পুনর্জাগরণ সূচীত হয়। হাদীসের পরিভাষায় যুগ-পুরুষদের মোজাদ্দেদ বলা হয়েছে। যা হিজরী দ্বিতীয় শতক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই ধারার কোন ব্যতিক্রম নেই। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আগমন জগতে নবুওয়াতের দরজা বন্ধ রয়েছে। হযরত আদম (আ.) হতে শুরু করে হযরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত ধর্মযুগকে ঢালাও ভাবে নবুওয়াতের যুগ বলা হয়। হুজুর পাক (সা.)-এর আবির্ভাবে জগতে নবুওয়াতের এই ধারা প্রবাহ বন্ধ হয় যে যুগের সূত্রপাত হয় তাকে বেলায়েতে মোহাম্মদীর যুগ বা উম্মতে মোহাম্মদীর যুগ বলা হয়। যা কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে জারি থাকবে (ইনশাআল্লাহ)।