তিন দিনেও নেভেনি সুগার মিলের আগুন


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:১০ অপরাহ্ন, ৭ই মার্চ ২০২৪


তিন দিনেও নেভেনি সুগার মিলের আগুন
ছবি: সংগৃহীত

তিন দিন পার হলেও এখনো নেভেনি চট্টগ্রামে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে লাগা আগুন। এই আগুন কবে নিভবে তা নিয়ে স্থানীয় মানুষের মাঝে  প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, আগুন পুরোপুরি নিভতে আরও সময় লাগবে। এদিকে, পুড়ে যাওয়া গলিত চিনি লাভা পড়ে কর্ণফুলী নদীর মাছসহ নদীর নানা জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে।


বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে পারেনি। এখনো ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নিভাতে  কাজ করে যাচ্ছে। আজ সকালে আগুন লাগার স্থান পরিদর্শনে এসেছেন ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রায় ৩ দিন ধরে এ আগুন দাউ দাউ করে জ্বললেও নেভার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের যত ধরনের প্রযুক্তি আছে তার সকলই এখানে কাজে লাগানো হয়েছে। তারপরও এ আগুনের কাছে যেন সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।


গণমাধ্যমকে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক জানান, “এস আলম চিনি কারখানার গুদামে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। পানি দিয়ে নেভানো যাচ্ছে না। এখানে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত চিনি মজুত ছিল। সেগুলো এক ধরনের দাহ্য পদার্থ। এ কারণে আগুন নেভাতে সময় লাগছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। আজ সকালে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন।”


তিনি আরও বলেন, “গুদামটি প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুটের। উচ্চতা প্রায় পাঁচ থেকে ছয়তলা ভবনের সমপরিমাণ। এ গুদামে ন্যূনতম ফায়ার সেফটির ব্যবস্থা রাখেনি প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে আগুন ব্যাপক আকারে ছড়িয়েছে।”


আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ৪৩ ঘণ্টায়ও নেভেনি সুগার মিলের আগুন


ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (প্রশাসন অর্থ) জসিম উদ্দিন বলেন, “যে গুদামটিতে আগুন লেগেছে সেটিতে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত চিনি মজুত ছিল। এগুলো এক ধরনের ধার্য পদার্থ। পানি দিয়েও এ আগুন নেভানো যাচ্ছে না। এ কারণে আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। তবে আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেটি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কবে নাগাদ নেভানো যাবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।”


এখানে কি শুধু অপরিশোধিত চিনি ছিল, নাকি অন্যকোনও রাসায়নিক মজুত ছিল- এমন প্রশ্নের উত্তরে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত বাইরে থেকে পানি ছিটাচ্ছি গুদামে। আগুনের ভয়াবহতার কারণে গুদামের ভেতর প্রবেশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভেতরে যতটুকু দেখা যাচ্ছে, তাতে ফায়ার সেফটি না থাকার বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে। এখানে চিনি ছাড়া অন্য কোনও দাহ্য পদার্থ রাখা হয়েছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। আগুন নেভার পর খতিয়ে দেখা হবে।”


আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সুগার মিলে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১৮ ইউনিট


এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো. হোসেন বলেন, “একই স্থানে আমাদের মোট ছয়টি গুদাম আছে। সোমবার ১ নম্বর গুদামে আগুন লাগে। এ গুদামটিতে এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি অপরিশোধিত চিনি ছিল। যার সবটুকুই পুড়ে গেছে। যার বাজার মূল্য হাজার কোটি টাকার বেশি। গুদামটিতে এখনও আগুন জ্বলছে।”


সোমবার (৪ মার্চ) বিকাল ৩টা ৫৩ মিনিটে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকার এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগে। সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে দাবি করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তবে নেভানো সম্ভব হয়নি।


জেবি/এসবি