সিরাজগঞ্জে ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মা সমাবেশের প্রায় ২২লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৪৬ অপরাহ্ন, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪


সিরাজগঞ্জে ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মা সমাবেশের প্রায় ২২লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ
ডা.জাহিদুল ইসলাম

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ২০২৩ নভেম্বর ২দিন ও ২০২৪ সালে মার্চ মাসে পুষ্টি বিষয়ে ২দিন ব্যাপী মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার বরাদ্দ প্রদান হয়। ২০২৩ নভেম্বর ২দিনব্যাপী মা সমাবেশের ১০লাখ ৯৭হাজার ১'শ টাকার আত্মসাত ও চলতি বছরে ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিক থেকে মার্চের ১০ তারিখের মধ্য মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত না করে ১৪মার্চ ২০২৪ইং তারিখে ১০লাখ ৯৭হাজার ১'শ টাকা বরাদ্দের বিল ভাউচার স্বাক্ষর করে সিরাজগঞ্জ জেলা হিসারক্ষন কর্মকর্তা বরাবর জমা প্রদান করেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কর্মকর্তা ডা.জাহিদুল ইসলাম।


আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে গাঁজাসহ ৪ মাদক কারবারি আটক



ইতোমধ্যে বিল ভাউচারের বরাদ্দ জেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা থেকে চেক  সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কর্মকর্তা কার্যালয়ের হিসার নম্বরে বরাদ্দের অর্থ সংগ্রহ করেছেন। 


তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ফটোসেশন করেই মা সমাবেশ শেষ করা হয়েছে। অফিসের পিয়নের মাধ্যমে ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের নাম ফাকা রেখে একটি ব্যানার তৈরী করে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে ফটোসেশন দিয়ে শেষ করা হয়েছে মা সমাবেশ।


কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএইসসিপিরা জানান, পরিসংখ্যানবিদ আব্দুর রহিম ক্লিনিক আসার ১ঘন্টা পুর্বে মোবাইল করত আমরা আসতেছি, ১০/১২জন মা হাজির রাখো। রহিমের কথামত ক্লিনিকের আশেপাশের ১০/১২জন মহিলাদের হাজির করা হত। দুইজন দিয়ে ব্যানার উচু করে ধরে রাখতাম, ১০/১২জন মাকে ছবি তুলে দিতাম। রহিম ৩০জনের ঘর সম্বলিত একটি হাজিরা সিট দিত। রোগিরা আসত হাজিরা সিটে ৩টি স্বাক্ষর রেখে দিতাম। এভাবে ৩০জনের হাজিরা সম্পুর্ন হলে ২দিন পর অফিসে মা সমাবেশের হাজিরা সিট জমা দিয়ে আসি। এভাবে শেষ করা হয় মা সমাবেশ।


সিএইসসিপিরা আরো জানান, ২০২৩ সালে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মা সমাবেশে এভাবে কাজ করে দেওয়ার ফলে আমরা প্রতিজন ৬'শ টাকা করে পেয়েছি। ৬'শ টাকা ছাড়া কাউকে কোন টাকা পয়সা দেয়নি অফিস কর্তৃপক্ষ।


আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ



তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ২দিনব্যাপী ৩০জন মাকে নিয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত করার  জন্য ৩০জন মায়ের আপ্যায়ন ভাতা, স্টেশনারী, ব্যানার, স্থানীয় স্টাফদের সম্মানী, লোকাল পার্সনদের সম্মানী, কো-অর্ডিনেটরদের সম্মানী ভাতা রয়েছে। একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ২দিন ব্যাপী মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত করার জন্য প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ২৩হাজার ২'শ ৫০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে  মা সমাবেশের জন্য ১০লাখ ৯৭হাজার ১০০টাকা পুরোটাই হজম করতে ফটোসেশন করেই মা সমাবেশ সমাপ্ত করেছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: জাহিদুল ইসলাম। ২০২৪এর মার্চ ও ২০২৩সালের নভেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে পুষ্টি বিষয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  এই মা সমাবেশের বাজেটের তথ্য পেতে তথ্য অধিকার আইনে ফরম-ক তে আবেদন করেন দৈনিক জনবাণী পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন দুরন্ত। 


(১৭এপ্রিল ২০২৪) সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ আব্দুর রহিম নিকট ২০টাকার সরকারি কোর্ট ফি সম্বলিত তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন জমা দেন। তথ্যপ্রাপ্তির আবেদনপত্র জমা রাখেন আব্দুর রহিম। কিন্তু কোন রিসিভ কপি প্রদান করা হয় না।


 বারবার রিসিভ কপি ফেরত দেওয়ার কথা বলা হলে পরিসংখ্যানবিদ আব্দুর বলেন, আমাদের অফিসে কোন রিসিভ কপি দেওয়া হয় না। ইতিমধ্য ২০২৩ নভেম্বর ২দিনব্যাপী মা সমাবেশের ১০লাখ ৯৭হাজার ১'শ টাকার আত্মসাত করেছেন বলে স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিযোগ করেন।


সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, তথ্য অধিকার আইনে তথ্য ফরম-ক পেয়েছি। আমি তথ্য আপনাকে দিতে পারব না। আপনি আমার কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন মহোদয়ের বরাবর আবেদন করুন। আমাকে সিভিল সার্জন মহোদয় মাধ্যমে তথ্য দিব।


জেবি/এসবি