জলে-জলে উচ্ছ্বাসিত সমুদ্র শহর

রাখাইনদের তিন দিনের জলকেলি উৎসব শেষ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪


রাখাইনদের তিন দিনের জলকেলি উৎসব শেষ
ছবি: প্রতিনিধি

সারাদেশের মতো এখন সমুদ্র শহর কক্সবাজারেও তীব্র গরম। আবাহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, কক্সবাজারে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে তা অনুভূত হয়েছে ৪৩ ডিগ্রীর মতো। এই তীব্র গরমেই জলে জলে উচ্ছ্বাসিত ছিল কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ। ঐতিবাহি তিনদিনের জলকেলি উৎসবের শেষ দিন কক্সবাজারের রাখাইন পল্লী ঘীরে সৃষ্টি হয়েছিল কৃত্রিম বৃষ্টির। কেবল পাত্র দিয়ে পানি নিক্ষেপ না রীতিমত পানির পাইব লাগিয়ে পানি বর্ষণের তীব্র প্রতিযোগিতা ছিল দিনব্যাপী। যেখানে রাখাইনদের সাথে যুক্ত হয়েছিল সকল ধর্মের মানুষ। তীব্র গরমে জলে-জলে বিমুগ্ধতায় হয়ে উঠেছিল অসম্প্রদায়িক একটি উৎসবের।


আর সেই জলে জলে একে অপরকে নতুন বছর সকলের সুন্দর ও মঙ্গল কামনায় শেষ হল তিনদিনের এই উৎসব।


রাখাইন পঞ্জিকা অনুসারে ১৩৮৫ রাখাইন বর্ষের শেষ দিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হয় ১৩৮৬ রাখাইন বর্ষ। এই বর্ষ বিদায় ও বরণে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ৭ দিনের ‘সাংগ্রেং’ বা বর্ষ বিদায় ও বরণ উৎসব পালন করে হচ্ছে দীর্ঘদিনের। সামাজিক নিয়ম মতে, রবিবার (১৪ এপ্রিল) শুরু হয়েছে এই উৎসব। আর তিন দিনের জলকেলি উৎসবের মধ্যে দিয়ে উৎসবের শেষ হল শুক্রবার।


আরও পড়ুন: রাখাইন বর্ষ ১৩৮৬ বরণে তিন দিনের জলকেলি উৎসব শুরু


কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীগুলোতে ২৫ টির বেশি প্যান্ডেলে তিন দিনের এই জল খেলা চলেছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, চৌফলদন্ডী, টেকনাফ ও রামুতে রাখাইন পল্লীতেও চলেছে এই উৎসব।


রাখাইন পল্লীগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, নানা প্রজাতির ফুল আর রঙ-বেরঙের কাগজে সাজানো হয় প্যান্ডেলে সারিবদ্ধ পানি ভর্তি ড্রাম নিয়ে ঐতিহ্যবাহি পোষাক পরিহত রাখাইন তরুণীদের অপেক্ষা। আর নানা সাজে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে-গেয়ে দলবেঁধে এক-একটি প্যান্ডেলে ছুটে যাচ্ছেন নানা বয়সের মানুষ সহ তরুণের দল। প্যান্ডেলে পৌঁছেই এক-একজন তরুণ তাদের পছন্দের তরুণীদের নিক্ষেপ করে পানি। আর তরুণীও পানি নিক্ষেপ করে প্রতিউত্তর দেয়। এরপর টানা চলে একে অপরকে পানি নিক্ষেপের এই খেলা।


উৎসবের শেষ দিন কক্সবাজার সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যা থিং অং জানান, শেষ দিন এটি অসম্প্রদায়িক একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। সকল ধর্মের মানুষ এসে এই উৎসবকে আরও বেশি উৎসব মুখর করে তুলেছে। শেষ দিন পানি বর্ষণের পাশাপাশি রাখাইনদের ঐতিবাহি খাবার পরিবেশ হয়েছে ঘরে ঘরে। নুতন বছর সুন্দরের প্রত্যাশায় এই উৎসবের শেষ হল। একে অপরকে নতুন বছর সকলের সুন্দর ও মঙ্গল কামনায় শেষ হল তিনদিনের এই উৎসব।


এমএল/