রাখাইন বর্ষ ১৩৮৬ বরণে তিন দিনের জলকেলি উৎসব শুরু


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, ১৭ই এপ্রিল ২০২৪


রাখাইন বর্ষ ১৩৮৬ বরণে তিন দিনের জলকেলি উৎসব শুরু
ছবি: প্রতিনিধি

বিভিন্ন প্রজাতির ফুল আর রঙ-বেরঙের কাগজে সাজানো হয় প্যান্ডেলে সারিবদ্ধ পানি ভর্তি ড্রাম নিয়ে ঐতিহ্যবাহি পোষাক পরিহত রাখাইন তরুণীদের অপেক্ষা। আর নানা সাজে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে-গেয়ে দলবেঁধে এক-একটি প্যান্ডেলে ছুটে যাচ্ছেন নানা বয়সের মানুষ সহ তরুণের দল। প্যান্ডেলে পৌঁছেই এক-একজন তরুণ তাদের পছন্দের তরুণীদের নিক্ষেপ করে পানি। আর তরুণীও পানি নিক্ষেপ করে প্রতিউত্তর দেয়। এরপর টানা চলতে থাকে একে অপরকে পানি নিক্ষেপের এই খেলা।


রাখাইন বর্ষ বরণ ও বিদায়ের ঐতিহ্যবাহি তিন দিনের জলকেলি উৎসবের দৃশ্য এটি। বুধবার (১৭ এপ্রিল) কক্সবাজারের রাখাইন পল্লীগুলোতে শুরু হয়েছে তিন দিনের এই উৎসব।


রাখাইন সম্প্রদায়ের বিশ্বাস এই জল মঙ্গলের। এই মঙ্গল জলে ধুয়ে মুছে যাবে পুরাতন বছরের সকল ব্যথা, বেদনা, গ্লানি, অপ্রাপ্তি আর অসঙ্গতি। আর নতুন বছর হবে শুচিতা বা নির্মলের।


রাখাইন পঞ্জিকা অনুসারে ১৩৮৫ রাখাইন বর্ষের শেষ দিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে ১৩৮৬ রাখাইন বর্ষ। এই বর্ষ বিদায় ও বরণে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ৭ দিনের ‘সাংগ্রেং’ বা বর্ষ বিদায় ও বরণ উৎসব পালন করা হচ্ছে দীর্ঘদিনের। সামাজিক নিয়ম মতে, রবিবার (১৪ এপ্রিল) শুরু হয়েছে এই উৎসব। তিন দিনের জলকেলি উৎসবের মধ্যে দিয়ে শনিবার (২০ এপ্রিল) এই উৎসবের শেষ হবে।


আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত কমানোর দাবিতে মানববন্ধন


কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা মংথেলা রাখাইন জানান, রবিবার (১৪ এপ্রিল) চন্দন মিশ্রিত জল দিয়ে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৭ দিনের এই উৎসব। এলাকা ভিত্তিক রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন বিহার ও ঘরে থাকা বৌদ্ধ মূর্তি স্নান করে এই উৎসবের শুরু করে। উৎসবের দ্বিতীয় দিন সোমবার শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিহার প্রাঙ্গনে জড়ো হন রাখাইনরা। ওখানে ঠান্ডা শরবত পান এবং পঞ্চশীল গ্রহন করে সকলের মঙ্গল প্রার্থনা করা হয়। পঞ্চশীল একটি ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন।


তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) তৃতীয় দিন রাখাইন শিশু-কিশোররা একে-অপরকে পানি নিক্ষেপ করেছে। আর উৎসব মুল শেষ ৩ দিনের জলকেলি বা পানি খেলা শুরু হল আজ থেকে।


কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীগুলোতে ২৫ টির বেশি প্যান্ডেলে তিন দিনের এই পানি খেলা চলছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, চৌফলদন্ডী, টেকনাফ ও রামুতে রাখাইন পল্লীতেও চলছে এই উৎসব।


এদিকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাখাইনদের অন্যতম এই উৎসব সফল এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ করতে পুলিশ ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাখাইন পল্লীগুলোতে পোষাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোষাকে নজরধারী রয়েছে। উৎসব স্থলে রয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাও। শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এই উৎসব শেষ হবে এমনটাই বলছেন তিনি।


এমএল/