তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ, রেকর্ড ভাঙ্গল ৭৬ বছরের


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:১৫ অপরাহ্ন, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪


তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ, রেকর্ড ভাঙ্গল ৭৬ বছরের
ছবি: সংগৃহীত

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। কখনো তীব্র আবার কখনো অতি তীব্র তাপপ্রবাহ দেশের বেশ কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। গরমে হাঁসফাঁস মানুষের জীবন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) চলতি মাসে ২৪ দিনের মতো তাপপ্রবাহ বইছে, যা গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে এই অবস্থা সম্পূর্ণ এপ্রিল মাসজুড়েই অব্যাহত থাকবে।


শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে এক বছরে তাপপ্রবাহের দিনের সর্বোচ্চ রেকর্ড ভেঙেছে। গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে বাংলাদেশে।


অন্তত টানা দুদিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বিভাগে ১ এপ্রিল থেকে এই তাপপ্রবাহ শুরু হয়। এরপর ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগটির তাপমাত্রা ৩৬-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে ঢাকা, খুলনা ও রংপুর বিভাগেও তাপমাত্রা বাড়ে এবং দুদিন ধরে তা অব্যাহত থাকে।


এদিকে, গত ৮ এপ্রিল কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে ৯ ও ১০ এপ্রিল সারাদেশেই তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল। এরপর ১১ এপ্রিল থেকে উষ্ণতা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। যা এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।


আরও পড়ুন: ঝড়ের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস


এই তীব্র তাপপ্রবাহে সবথেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শিশুরা গরমে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের জ্বর-সর্দি আর ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে। গত কয়েক দিনে শিশু হাসপাতালে বেশ ভিড় বেড়েছে।


এদিকে পুরো এপ্রিলজুড়ে তাপপ্রবাহ থাকলেও মে মাসের শুরু থেকে গরম কমার সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া বিদরা। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, এপ্রিলজুড়েই থাকবে এই তাপপ্রবাহ। তবে মে মাসের শুরুতেই সারাদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরপরই গরম কিছুটা কমে আসবে।


অন্যদিকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এই অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্কই থাকতে পারে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ও জলবায়ুসংক্রান্ত রেকর্ড থেকে বোঝা যায়, গত কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশে উষ্ণতার মাত্রা ও এর স্থায়িত্ব বেঁড়েই চলেছে।


এদিকে চুয়াডাঙ্গা, যশোর, পাবনা এবং রাজশাহীতে তাপপ্রবাহের প্রখরতা তুলনামূলক বেশি।


এমএল/