প্রকাশ্যে চড়-ঘুষি, লোকলজ্জায় মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


প্রকাশ্যে চড়-ঘুষি, লোকলজ্জায় মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় শারিরীক লাঞ্চিতের দুদিন পর মাসুমা আক্তার (১৭) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা করেছে। রোববার (২০ মার্চ) বিকেলে নিজ শয়ন কক্ষে গলাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। 

মাসুমা আক্তার চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হকপাড়ার আমিনুল ইসলামের মেয়ে ও চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার আলিম (এইচএসসি) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল। সে পড়াশোনার পাশাপাশি অসুস্থ বাবার দোকানও দেখাশোনা করতো।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮ টার দিকে দোকানের মধ্যে পৌর এলাকার আরামপাড়ার মোবারকের ছেলে কালামের সঙ্গে ভুয়া পুলিশ সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্যদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে কালাম ওই পুলিশ সদস্যকে চড়-ঘুষি মারেন। দোকানের ভিতরে হট্টগোল হতে দেখে মাসুমা আক্তার তাদের নিষেধ করে। এতেই মাসুমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রকাশ্যে চড়-ঘুষি মারে কালাম। এরপর হাতুড়ি নিয়ে পেটাতে গেলে পালিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেই মাসুমা। 

নিহতের বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চার বোনের মধ্যে মাসুমা আক্তার ছিল সবার ছোট। দীর্ঘদিন যাবত মাসুমা আক্তারকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল কালাম। এর আগে এসিড মারার হুমকিও দিয়েছিল। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করতো। গত শুক্রবার আমার মেয়ে দোকান খুলে চা বানাচ্ছিল। এসময় দোকানে থাকা সাদা পোষাক পরিহিত এক পুলিশ সদস্যকে ভূয়া বদনাম দিয়ে তাকে চড়-ঘুষি মারে কালাম। এতে আমার মেয়ে প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়েকে প্রকাশ্যে চড়-ঘুষি মারে কালাম। ঘটনার দুদিন পার হলেও রোববার বিকেলে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা ছিল। তার আগেই লোকলজ্জায় আমার মেয়েটা গলাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুমাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতে মাসুমার ঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার উদ্ধার করে পুলিশ।’

এদিকে মাসুমার সহপাঠীরা অভিযুক্ত কালামের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিছুজ্জামান লালন জনবাণীকে বলেন, ‌‘বাবা অসুস্থ হওয়ার মাসুমা আক্তার পড়াশোনার পাশাপাশি দোকান দেখাশোনা করত। শুক্রবার দোকানের মধ্যে স্থানীয় এক যুবক তাকে চড়-ঘুষি মারে। এতে লোকলজ্জায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’ 

এসএ/