গজারিয়ায় আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার অর্থ বাণিজ্য


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, ৮ই মে ২০২৪


গজারিয়ায় আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার অর্থ বাণিজ্য
প্রতীকী ছবি

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গজারিয়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোসলেমা বেগমের অর্থ বাণিজ্য এখন তুঙ্গে। আনসার ভিডিপি সহকারী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন ও আনসার  কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এমন অর্থ বাণিজ্য করে আসছেন তিনি ।


এতে গোটা উপজেলার সহস্রাধিক আনসার ও ভিডিপি সদস্য ওই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদন্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।


জানা যায়, আনসার ভিডিপির ওই কর্মকর্তা মোসলেমা বেগম যোগদানের পর থেকেই তিনি অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে উৎকোচ গ্রহণ করতে থাকেন। কেউ কোন প্রতিবাদ করলে আরিফ ও মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে তাকে শায়েস্তা করেন। এদের শায়েস্তা করতে সদস্যের দিয়ে সই করিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেন।


অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত জাতীয় নির্বাচনে এ উপজেলায় ৬০টি ভোট কেন্দ্রে ৬০টি দল দেয়া হয়। ৬০ দলে ১২ জন করে মোট ৭২০ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দেয়া হয়। তাদের প্রতিজনের কাছ থেকে ৪০০ টাকা করে মোট উৎকোচ নেন ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। এর বাইরে প্রতিজন আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে তোলে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তাতে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ থেকে ৬ লাখ টাকা মাঠ পর্যায় থেকে আদায় করেন।


চলতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারো ওই সিন্ডিকেট মেতে উঠেছে অর্থ বাণিজ্যে। এবার তারা ৬০টি ভোট কেন্দ্রে ৬০টি দল গঠন করেছে। প্রতি দলে ১৩ জন করে মোট ৭৮০ জন সদস্যকে বাছাই করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: মুন্সিগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নারী আরোহীর মৃত্যু


আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মোসলেমা বেগম ও আরিফ হোসেন প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে মোট টাকা ২ লাখ ৩৪ হাজার  টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর বাইরে আরিফ ও মোহাম্মদ আলী সিন্ডিকেট করে প্রতিজন আনসার সদস্য নিয়োগের বিপরীতে ৮শ টাকা থেকে ১৫শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে আরও ৬ লাখ টাকারও বেশি পিসি এপিসিরা হাতিয়ে নিয়েছেন। সাধারণ আনসারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। তারা জানান, আমরা কোন কথা বললে আমাদের আর কোন দিন ডিউটিতে পাঠাবে না।


আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা এখানে যোগদান করার পর স্বভাবসুলভভাবে একের পর এক দুর্নীতি করেই চলেছেন। একবার এক মহিলা সদস্য ওই মোসলেমা বেগমকে ৩ হাজার টাকা স্বামীকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ বাবদ উৎকোচ দেওয়ার সময় গোপনে ভিডিও করেন। এরপর থেকে ওই অফিসে কোন আলোচনা করার পূর্বে বিশেষ করে নির্বাচন ডিউটি বিষয়ে টাকা পয়সার আলোচনা করার সময় সবার মোবাইল ফোন জব্দ করে রেখে তারপর আলোচনা করেন। কেউ কোন কথা সাংবাদিক বা কোন কর্তৃপক্ষের কাছে ফাঁস করলে তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়।


আরও পড়ুন: মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে আগাম সবজি চাষে সাফল্য


অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোসলেমা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রুপ কমান্ডররা টাকা নেয়। আমি কোন টাকা পয়সা কারো কাছ থেকে নেইনি। আরিফ, মোহাম্মদ আলী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এসব রটাচ্ছে। এরপরে আনসার কর্মকর্তা মোসলেমা বেগম সাংবাদিকদের আবার তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। কথার ফাঁকের এক পর্যায়ে তিনি নিউজ না করার অনুরোধ করে তার পার্স ব্যাগ থেকে টাকা বের করে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। সাংবাদিকরা উৎকোচ নিতে রাজি না হলে তার সহকারী অফিসার আরিফ হোসেনকে দিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দেন যে এবিষয়ে কোন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হলে পরে দেখে নিবে ।


এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করালে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


জেবি/এসবি