কক্সবাজারের আকাশে রোদ-মেঘের খেলা, বেড়েছে সাগরের পানির উচ্চতা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:২৬ অপরাহ্ন, ২৬শে মে ২০২৪


কক্সবাজারের আকাশে রোদ-মেঘের খেলা,  বেড়েছে সাগরের পানির উচ্চতা
ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যতম উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের আকাশ জুড়ে কখনও রোদ আর কখনও মেঘের খেলা চলছে। একই সঙ্গে রয়েছে মাঝারি বাতাস। যে বাতাসের কারণে অনুভুত হচ্ছে একটি ঝড়ো হওয়া বার্তা। তবে সাগর পাড়ে গেলেই পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়া দৃশ্যের দেখা মেলে।


আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে,  বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমাল আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আজ সকাল ৬টায় এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে দেশের পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাপবিদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি আঘাত হানার সময় জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা বেড়ে ৮ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আবস্থান করছে।


যার প্রভাবে শনিবার (২৪ মে)সন্ধ্যার পর কক্সবাজারের উপকূলবর্তী কিছু এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্ত রবিবার (২৫ মে) সকাল থেকে বদলে গেছে তা। কখনও সূর্য উঁকি দিয়ে রোদ আবার মেঘ ঢেকে দেয়া আকাশ। এর মধ্যেই মাঝারী বাতাসের ধাক্কা।


আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি


রেমলের প্রভাব এখন পুরোই সাগরে। সাগরের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।


কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, সাগরের পানি স্বাভাবিক অবস্থা চেয়ে সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতা বেড়েছে। ফলে সাগরবর্তী এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করবে।


তিনি জানান, ভোর ৫ টা ৫৮মিনিটে জোয়ার শুরু হয়। দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে পূর্ণ জোয়ার হয়ে ভাটা শুরু। যা পূর্ণ ভাটা হবে সন্ধ্যা ৬ টা ৪১ মিনিটে। পরে পূর্ণ জোয়ার হবে রাত ১ টায় তখন সাগর স্বাভাবিক হবে। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ডের কথা জানিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। 


সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। 


সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, জানান, ‘জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমরা দ্বীপের লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে যেতে মাইকিং করছি। 


আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বন্দর ও উপকূলে মহাবিপদ সংকেত


এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বলেন, ‘বিপদ সংকেত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বসবাসকারীদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। দ্বীপে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার-পানি মজুদ রাখার পাশাপাশি আমাদের মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে।'


কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় জেলার ৬৩৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ৮ হাজার ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং ২ হাজার ২০০ জন সিপিপি কর্মিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য। 


দুর্যোগকালীন মানুষকে সহায়তার প্রস্তুতি সম্পর্কে মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য ৪৮৬ মেট্টিক টন চাল, ২ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, ২৩ বান্ডিল ঢেউটিন, টিনের সাথে গৃহনির্মাণের মজুরীর জন্য ৬৯ হাজার নগদ টাকা মজুদ রয়েছে। 


জেবি/এসবি