সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেঙেছে গাছ-পালা ও ঘরবাড়ি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১৬ অপরাহ্ন, ২৭শে মে ২০২৪


সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেঙেছে গাছ-পালা ও ঘরবাড়ি
ছবি: প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলীয় বেশ কয়েকটি এলাকা। ইতোমধ্যেই টেকনাফ উপজেলা শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৫০০ বাড়িঘর উড়ে গেছে, ভেঙে গেছে গাছপালা। এছাড়া সমুদ্রের পানি বৃদ্ধির কারনে দ্বীপের চারপাশের ভাঙন ধরেছে। এছাড়া শাহপরীর দ্বীপে পশ্চিম বাঁধের দেড় কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 


সোমবার (২৭ মে) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সমুদ্রে পানির বৃদ্ধির কারনে দ্বীপের ডেইল পাড়া, পশ্চিম পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, পূর্ব পাড়ার কিছু অংশ সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। এছাড়া দেড়শ ঘরবাড়িসহ বিপুল পরিমান গাছ পালা ভেঙে গেছে। 


তিনি বলেন, কিছু ঘরবাড়ি পুরোপুরি, কিছু আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১৫টি মাছ ধরার ট্রলার ভেঙে গেছে। এখনও বাতাস বইছে, কোথাও কোথাও গাছপালা ও কাঁচা বাড়িঘর ভেঙে গেছে। তবে জলোচ্ছ্বাস হয়নি। তবে সকালে বৃষ্টি কমলেও বাতাসের গতি বেড়েছে।


আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের ৩০ গ্রাম প্লাবিত


দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত দুইদিনে বৃষ্টি ও সমুদ্রের স্রোতে দ্বীপের কোনারপাড়া, পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও উত্তরপাড়ায় ভাঙন ধরেছে। এতে দ্বীপের বসতি, কেয়াবাগান, নারিকেল বাগান, নিশিন্দা বাগানসহ গাছগাছালি ভেঙে পড়ে গেছে। এছাড়া দ্বীপের তীরে গড়ে ওঠা হোটেল-মোটেলের অংশেও ভাঙন ধরেছে। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে দ্বীপ রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এ এলাকার বাসিন্দারা।


দ্বীপের স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ নোমান বলেন, ‘সমুদ্রের স্রোতে দ্বীপের কয়েকটি অংশে ব্যাপক ভাঙন ধরেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙন এটি। তাছাড়া ২০০ বছর আগে এ দ্বীপে বাসিন্দা ছিল মাত্র ১৩ জন। বর্তমানে ৯ হাজারের বেশি মানুষ এখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তার ওপরে গড়ে উঠেছে অবৈধ হোটেল-মোটেল। দ্বীপ নিচের দিকে দেবে সমুদ্রের স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে। এই দ্বীপকে রক্ষা করতে হলে জরুরী ভিত্তিতে চারদিকে বাধেঁর কোন বিকল্প নেই। এছাড়া বৃষ্টি ও বাতাসে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে। 


এদিকে সাবরাংয়ে ঘরবাড়ি চেয়ে লবন চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফর সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন। তিনি দাবি করেন, 'ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমের বেড়ি বাঁধ এবং মেরিন ড্রাইভের একটি অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার এলাকায় সব মিলিয়ে তিনশ ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিপুল পরিমান সুপারী গাছ ভেঙে গেছে। এছাড়া আমার এলাকার ৩'শ ঘরবাড়ির মধ্য কিছু পুরোপুরি, কিছু আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে সাধারণ মানুষ


জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি কমলেও বাতাস এখনো টেকনাফ উপজেলায় বইছে। এতে সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপের ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমাদের কোন কোন এলাকয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোর তথ্য সংগ্রহ করছি। এছাড়া চিংড়ী ঘের ও লবন চাষীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


এমএল/